এমপিওভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবীতে সারাদেশের ন্যায় পাবনার ঈশ্বরদীতে কর্মবিরতি পালন করেছে শিক্ষকরা। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করতে দেখা গেছে। এসময় বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা শিক্ষক-কর্মচারিদের কর্মবিরতিকে সমর্থন জানিয়ে যোগ দেন।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষকরা বলেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক—কর্মচারীরা পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যক্রম সিলেবাস, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হলেও শিক্ষাব্যবস্থায় সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক—কর্মচারীদের সুযোগ—সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাপক পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া, ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং উৎসব ভাতা পান ২৫ শতাংশ। অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে শিক্ষক—কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০ শতাংশ কেটে রাখলেও ৬ শতাংশের বেশি সুবিধা এখনও দেওয়া হয় না এবং বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সভাপতি ও নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, সারাদেশের সকল এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষকরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী সহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমাদের দাবী দ্রুত মেনে নিয়ে আমাদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে হবে। নয়তো আমাদের কঠোর কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে যেতে হবে।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সাধারন সম্পদক ও ভাষা শহীদ বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক মুক্তার হোসেন বলেন, আমাদের এক দফা এক দাবি, সেটা হলো জাতীয়করণ। এর মাধ্যমে সারা দেশের মানুষের স্বার্থ জড়িত রয়েছে। কারণ এসব বিদ্যালয়ে সাধারণ মানুষের ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করে। দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আমরা পাবনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আমরাও কর্মবিরতি পালন করছি। এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা হলে শুধু শিক্ষকরা উপকৃত হবেন তা নয়, এখানে অভিভাবক ও সংশ্লিষ্টরাও উপকৃত হবেন।
এদিকে শিক্ষকদের সঙ্গে কর্মবিরতিতে যোগ দেন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা। তারাও বিদ্যালয়ের জাতীয়করণের দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা সরকারী বিদ্যালয়ে পড়তে চায়, কম বেতনে পড়তে চায়, সরকারী সব সুযোগ সুবিধা চায়। শিক্ষার্থীদের এই বৈষম্য বন্ধ করতে হবে। তাই আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানাই।