বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদীতে বাবার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সন্তানদের আহাজারি  ঈশ্বরদীতে মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ স্কুল শিক্ষার্থী  ঈশ্বরদীতে পুকুরে গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু রায়পুর মানব কল্যাণ সংস্থার  ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত  জীবনের জয়গান মানব কল্যান সংস্থার উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ ক্লাব আইজিয়ান এর উদ্যোগে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত  আওয়ামীলীগ হত্যায় উৎসাহী দল– ঈশ্বরদীতে রুহুল কবির রিজভী  ঈদ উপলক্ষে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের বিশেষ মহড়া  ঈশ্বরদীতে শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান মরিয়ম বেগম

‘ গর্বের ঈশ্বরদীর কৃষি ‘

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৮৪ বার পঠিত
আপডেট : রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২, ৫:০২ অপরাহ্ণ

উত্তরাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা হিসেবে ঈশ্বরদী এখন দেশব্যাপী পরিচিত একটি জনপদের নাম । এখানে যেমন রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে তেমনি ঈশ্বরদী ইপিজেডে ৩২৪ টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে । এই ধারা অব্যাহত আছে ।

অন্যদিকে কৃষি সেক্টরেও প্রচুর সফলতা এসেছে । তবে মৌসুমে উপযুক্ত দাম না পাওয়ার একটা সমস্যা মোকাবেলা করতে হয় উৎপাদকদের । কৃষিতে অভিজ্ঞ একাধিক ব্যক্তি বলেছেন , আমাদের দেশে এখনও বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে না ওঠায় প্রকৃত উৎপাদনকারীরা কৃষিপণ্যের সঠিক দাম পায় না । অনেক সময় উৎপাদন খরচও ওঠে না । এই অবস্থায় মাঠের কৃষকদের ভাগ্যের পরিবর্তন না হলেও মধ্যস্বত্তভোগীরা মুনাফা লুটে নেয় ।

ঈশ্বরদীতে ভাল ফলন হয় এমন কয়েকটি কৃষিপণ্যের উল্লেখ করা হলো ।

আগাম শিম চাষ

আগাম শিম চাষ করে সফল হয়েছেন ঈশ্বরদীর কৃষকরা । আগাম ‘ অটো শিম চাষে করে কৃষকরা প্রতিবারই লাভবান হয় । এবারো লাভবান হবেন তারা । এই স্বপ্ন রয়েছে তাদের । এই শিমের পরিচর্যায় চাষিরা ব্যস্ত । নাওয়া খাওয়া ছেড়ে চাষিরা এখন শিমের ক্ষেতে ফুল ও ফলের পরিচর্যায় সময় পার করছেন । মুলাডুলি এলাকার যে দিকে দু’চোখ যায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে চোখে পড়বে শিমের ক্ষেত । শিমের লতা – পাতার সবুজ সমারোহের সাথে গোলাপী ও সাদা ফুল পথচারীদের নজর কাড়ছে ।

এরই মধ্যেই কিছু কিছু গাছে শিম ধরতে শুরু করেছে । আগাম অটো শিমে লাভবান হওয়ার আশায় স্বপ্নে বিভোর ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের কৃষকরা । দেশের অন্যতম শিম উৎপাদনকারী এলাকা ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে হিসেবে খ্যাত জোরেসোরেই চলছে আগাম শিম চাষ । জৈষ্ঠ্যের মাঝামাঝিতে আগাম শিম চাষের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয় । বৃষ্টির পানি থেকে শিম গাছকে রক্ষা করতে জমিতে ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চি উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে ঢিবি বা বিট । উঁচু বিটে তারা অটো শিম চাষ হয়েছে ।

‘ অটো ‘ জাতের শিম গাছ ইতিমধ্যেই মাচায় উঠে ফুলে ফুলে ভরে গেছে । আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই পুরোদমে এসব শিম বাজারে উঠবে । আগাম অটো শিম চাষে প্রতিবছরই সফলতা পায় এখানকার চাষিরা । যেকারণে প্রতিবছরই শিমের আবাদ বাড়ছে । শিম চাষকে কেন্দ্র করে ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে গড়ে উঠেছে বিশাল সবজির বাজার । মৌসুমে প্রতিদিন গড়ে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক শিম ঢাকা , সিলেট , চট্টগ্রাম , বরিশালসহ দেশের জেলা শহরগুলোতে চালান হয়।

ঢ্যাঁড়শের ফলন ভাল

এবার ঈশ্বরদীতে ঢ্যাঁড়শের ভাল ফলন ও বাজারে দাম ভাল হওয়ায় কৃষকরা খুশি ছিল । ঢ্যাঁড়শের এবার ফলন হয়েছে খুব ভালো । আর অন্য বছরের তুলনায় এবারে বাজারমূল্য প্রায় দ্বিগুণ হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা । ঢ্যাঁড়শের আবাদ এলাকা ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কৃষকদের মধ্যে খুশির পরিবেশ ছিল । মুলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর ও নিকরহাটা এলাকায় শত শত হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়েছে । ফলন বেশ ভালো । প্রতি মণ ১৫০ টাকা চুক্তিতে নারী – পুরুষ ও শিক্ষার্থীরা জমি থেকে ঢ্যাঁড়শ তোলে । নিকরহাটার মোর্শেদ আলী জানান , ১৬ বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়শ আবাদে বিঘায় খরচ হয়েছে ২০-২২ হাজার টাকা । ৫০-৬০ হাজার টাকার ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন ।

সার , বীজ ও কীটনাশকের দাম না বাড়লে চাষিরা আরও লাভবান হতো বলে জানান তিনি । চাষি মোজাম্মেল জানান , ডিজেল – সার কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় কোনো ফসলেই লাভবান হতে পারছেন না । এবারে ঢ্যাঁড়শের বাজারদর বেশি হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হতে পারছে । এর আগে পাইকারি বাজারে ঢ্যাঁড়শ প্রতি কেজি ২০ টাকার বেশি বিক্রি হয়নি । কিন্তু এবারে ৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে । এখনও ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ।

আখের ৪৮ জাত উদ্ভাবন করেছে বিএসআরআই

ঈশ্বরদীস্থ বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট ( বিএসআরআই ) ‘ এ আখসহ মিষ্টি জাতীয় ফসলের উৎপাদন কলাকৌশল উদ্ভাবন ও বহুমুখী ব্যবহারের ওপর গবেষণা করা হয় ।

আখের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে এদেশের মিষ্টিজাতীয় খাদ্যের উৎস চিনি ও গুড় তৈরির শিল্প ।

এ গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি আখের পাশাপাশি সুগারবিট , তাল , খেজুর , গোলপাতা , মধু ও স্টিভিয়া প্রভৃতি মিষ্টি জাতীয় ফসলের ওপর গবেষণা করে আসছে । ইন্সটিটিউট সূত্রে জানা যায় , প্রতিষ্ঠানটি দেশের চিনি ও গুড় উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ।

১৯৫১ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে বিএসআরআইয়ের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয় । এর আগে ১৯৩১ সালে ঢাকার মনিপুরীপাড়ায় এ প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হয় । স্বায়ত্তশাসিত এ প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যন্ত আখের ৪৮ টি জাত উদ্ভাবন করেছে বিজ্ঞানীরা । এর মধ্যে তিনটি চিবিয়ে খাওয়া সুস্বাদু আখের জাত রয়েছে । দেশের চিনি ও গুড় উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে বিএসআরআই সারাদেশে তিনটি আঞ্চলিক কেন্দ্র ও ৯ টি উপকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে । এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৮৩ বিজ্ঞানী , ৩৯৩ কর্মকর্তা কর্মচারী ও ১১৬ শ্রমিক কর্মরত আছেন ।

ঈশ্বরদীর প্রত্যন্ত এলাকাজুড়ে উল্লেখিত সফলতা ছাড়াও গাজর , লিচু , টমেটো , বেগুন ইত্যাদি সব্জী ও ফলেও সফলতা রয়েছে । এই এলাকায় মৌসুমী সব্জী ও ফল সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নেই । এ কারনে উপযুক্ত পদ্ধতিতে এগুলো সংরক্ষণের কোন সুযোগ কৃষকদের । কিছুদিন রেখে চাহিদার সময় কৃষিপণ্য বিক্রি করতে পারলে উপযুক্ত দাম পৈত উৎপাদনকারীরা । বিষয়টি নজরে আনার জন্য দাবি জানিয়েছেন অনেক কৃষি উৎপাদক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!