পাবনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক ভবনে পানির সমস্যা নিরসনের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। গত বুধবার (১৭ আগস্ট) রাত থেকে তারা কর্মবিরতি শুরু করেন। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুর পর্যন্তও তাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে।
পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি স্বপ্নীল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েক দিন ধরে হাসপাতালের আবাসিক হোস্টেলে পানি সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। এতে করে তাদের গোসল, খাওয়া, টয়লেটসহ বিভিন্ন কাজে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিষয়টি হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে জানানো হলেও তিনি এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। হোস্টেলে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবিতে তারা কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন। হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কেউ আমাদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের জন্য যোগাযোগ করেনি। পানির সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। এর চেয়ে বড় ধরনের কর্মসূচিও ঘোষণা করা হতে পারে।
পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফরহাদ হোসেন বলেন, হাসপাতালের শুধু আবাসিক ভবনেই নয়, পুরো হাসপাতালজুড়েই পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা খুবই খারাপ। মাঝেমধ্যেই পানি থাকে না। বিদ্যৎ থাকে না। জেনারেটরের ঠিকমত তেল থাকে না। সব মিলেয়ে অব্যবস্থাপনার মধ্যে হাসপাতালে সেবা দিতে হয়। কয়েকদিন ধরে হাসপাতালের আবাসিক ভবনে পানি নেই। এছাড়াও হাসপাতালের ওয়ার্ড নোংরা। ঠিকমতো হাসপাতালের ভেতরে পরিষ্কার করা হয় না। আমরা এসব বিষয় নিয়ে আন্দোলন করছি।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালের কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, ওয়ার্ডে ডাক্তারদের আগের মতো দেখা যাচ্ছে না। এতে সমস্যা হচ্ছে। ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা না দেওয়ায় তারা চরম বিপদের মধ্যে আছেন। রোগীর খারাপ সময়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হয়। সেগুলো নিতে পারছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি এক রোগীর অভিভাবক বলেন, কয়েকদিন ধরে ছোট্ট শিশুটি ঠান্ডা-জ্বরে ভুগছিল। গত মঙ্গলবার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার থেকে এখানে আর চিকিৎসক আসছে না। বিকেলের মধ্যে চিকিৎসক না আসলে এখান থেকে রিলিজ নিয়ে ক্লিনিকে ভর্তি করাতে হবে। আন্দোলনের বিষয়ে আমরা কিছু বুঝি না। শিশুর চিকিৎসা ঠিকমতো হচ্ছে না এটাই বুঝি।
পাবনা জেনারেল হাসপাতাল সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, হাসপাতালের আবাসিক ভবনে পানি সরবরাহের বড় পাম্পটি নষ্ট হয়ে গেছে। সাবমারসিবল পাম্প দিয়ে পানি সরবরাহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে কাজ শেষ হতে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করেন তিনি। তবে কতদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে রোগীদের সেবা দেওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কেউ চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটার ব্যাপারে অভিযোগ করলে সেটি সত্য নয়।