দায়িত্বহীন ও সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িয়ে নিজেকে আলোচনা সমালোচনার তুঙ্গে তুলেছেন বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক (ডিওটি) ইসমাৎ আরা। সাম্প্রতি নিজের ব্যাক্তিগত কাজে সরকারী গাড়ি ও জ্বালানী ব্যবহার করে আবারো বিতর্কিত হয়েছেন বিএসআরআই এই পরিচালক। গত ২১ অক্টোবর বিনা অনুমতিতে পাবনার চাটমোহরে নিজের ব্যক্তিগত কাজে সরকারী গাড়ি ও জ্বালনী ব্যবহার করার অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসআরআই এর একাধিক কর্মকর্তা জানান, নিজের খেয়াল খুশিমত অফিস পরিচালনা ও দায়িত্বহীনতার কারনে সব সময় সমালোচিত হন ইসমাৎ আরা। অনুমতি না নিয়ে প্রায় বেশিরভাগ সময় সরকারী গাড়ি নিয়ে ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন তিনি। এছাড়াও সরকারী একজন কর্মকর্তা হয়েও ইসমাৎ আরা মাঝে মাঝেই সরকার বিরোধী নানা ধরনের পোস্ট ফেসবুকে শেয়ার করে সমালোচিত হয়েছেন। সাম্প্রতি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের মুখে এমন ক্যাপশনের সাথে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি সহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর ছবি সংযুক্ত করা একটি পোস্ট তার নিজস্ব ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার করলে তা নিয়ে আবারো সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ইসমাৎ আরা’র মেয়ে সাদিয়া তাসনিম বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী। গত ১৬ আগস্ট বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ক্লাসে সেনা শাসন আমল (১৯৭৫ থেকে ৯০) পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রশ্ন করা হয়েছিল ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট এর পর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের সংবিধানকে কারা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। এসময় ইসমাৎ আরার মেয়ে সাদিয়া তাসনিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আফাজ উদ্দীন বলেন, সাদিয়ার এমন অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্যে ঐ দিন শ্রেণী কক্ষে কিছুটা বিশৃঙ্খলতা সৃষ্টি হয়। পরে আমি পরিবেশ স্বাভাবিক করে শ্রেনী কক্ষে উপস্থিত সবাইকে সঠিক ইতিহাস তুলে ধরি। সাদিয়ার এমন অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য সত্যি দুঃখজনক ও বিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির ক্ষেত্রেও নেতিবাচক। পরে আমি একটি লিখিত নোট দিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বিষয়টি অবগত করি। তিনি আরও বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশ ও সঠিক ইতিহাস জ্ঞানার্জনে পারিবারিক শিক্ষা বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
অভিযোগ রয়েছে সরকারি বিশেষ কোন দিবস অথবা সরকার নির্দেশিত কর্মসূচিতেও ইসমাৎ আরা অনুপস্থিত থাকেন। গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের প্রস্তুতি মুলক সভাতে মহাপরিচালকের নির্দেশনা অমান্য করে সেখানে তিনি উপস্থিত হন নি। মুলত নিজের খেয়াল খুশিমত চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি।
এবিষয়ে বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষনা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ওমর আলী বলেন, জাতীয় শোক দিবসের প্রস্তুতি সভায় তাকে চিঠি দেওয়ার পরও সে চিঠি অমান্য করে সেখানে উপস্থিত হন নি। ইসমাৎ আরা অফিস চলাকালীন সময়ে তিনি ব্যাক্তিগত কাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। ব্যাক্তিগত কাজে সরকারী গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও করা হয়েছে। ফেসবুকে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে শেয়ার করা পোস্টের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারী দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে ফেসবুকে এমন পোস্ট করা সত্যি দুঃখজনক বিষয়।
তবে এসব অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন ইসমাৎ আরা। তিনি বলেন, একটি মহল আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে ও আমার সম্মানহানীর উদ্দেশ্যে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।