ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এ বছর পাবনার ঈশ্বরদীতে বেড়েছে সরিষার আবাদ। গত বছরের তুলনায় এবছর দ্বিগুণ জমিতে শুরু হয়েছে সরিষার চাষ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনের পাশাপাশি ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। আগামীতে সরিষার চাষাবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দিগন্ত জোড়া মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত। আমন ও বোরো ধানের মাঝের সময়ে কৃষকরা এ তেল জাতীয় ফসল চাষ করে থাকেন। বর্ষায় পানি কম হওয়ায় উপজেলার নিচু এলাকাগুলোতে এবছর পানি জমে নি, ফলে কৃষকরা আগাম জাতে সরিষা চাষ করেছেন। আগাম জাতের সরিষায় ইতিমধ্যে ফুলও এসেছে।
উপজেলার ইস্তা এলাকার সরিষা চাষি আব্দুল করিম বলেন, সরিষা চাষের ফলে পরিবারের তেলের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের খরচ যোগান দিতে পারবো। ফলন ভালো হয়েছে, দাম না কমলে এবছর লাভবান হবো বলে আশা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের তথ্যমতে, এ বছর উপজেলায় সরিষার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে। গত বছর ঈশ্বরদীতে ৬৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ।
উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন সহ পৌর এলাকাতে প্রতিবছর সরিষার ব্যাপক চাষ হয়ে থাকে। তবে সব চেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয় উপজেলার মুলাডুলি, দাশুড়িয়া ও ইস্তা এলাকায়।
উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহামুদা মুকমাঈনা বলেন, বাজারে সয়াবিনসহ অন্যান্য ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে এবছর সরিষার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। গাছ দেখে বোঝা যাচ্ছে ফলন ভালো হবে। সরিষা একটি লাভজনক ঝুঁকিমুক্ত ফসল। সরিষার আবাদ বৃদ্ধিতে সরকার কৃষকদের বীজ, সার ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, সরিষা চাষ সম্প্রসারণের জন্য কৃষি বিভাগ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ মৌসুমে সরকারিভাবে উপজেলার প্রায় ৩ হাজার ১০০ কৃষককে সরিষার বীজ ও সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বছর কৃষকরা আগ্রহী হয়ে বেশি পরিমাণ সরিষা চাষ করেছেন। আমরা আশাবাদী, আগামীতে সরিষার আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।