মেহেদী পাতায় হাত রাঙানোর কাজটি প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে।শুধু হাত রাঙানো নয়, তা বাদেও বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই মেহেদি পাতা।চুলের যত্নেও ব্যবহার করা হয় মেহেদি পাতা।
ছোট বড় নয় কম বেশি উভয়ই মেহেদির রং-এ রঙিন হতে ভালবাসে। তবে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অধিক হারে মেহেদি ব্যবহার করে থাকে। বিভিন্ন উৎসব,অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন প্রগ্রামে মেহেদিতে হাত রাঙাতে ভুলে না এখন আর কেউ। এতে তাদের সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি পায়। ছেলেরাও মাঝে মধ্যে কোন কোন উৎসবে ব্যবহার করে। তবে ছেলেদের তুলনাই মেয়েরাই বেশি ভালোবাসে মেহেদি।ফুল, লতা-পাতার বিভিন্ন ডিজাইনে নিজের হাত-পা কে করে তুলে আকর্ষনীয়।
মেহেদি পাতা শুধু হাত রাঙাতে নয় এখন মানব জীবনে অনেক রোগের ক্ষেত্রেও উপকারে আসে। এই পাতার ঔষধি গুণও যে আছে তা আমাদের অনেকেরই এখনও অজানা।
এ পাতার এখন এতটাই চাহিদা যে, বানিজ্যিক ভাবেও মেহেদি চাষ করা হচ্ছে। কমবেশি সব কাঁচা বাজারে আঁটিযুক্ত মেহেদির পাতা সহ ডাল বিক্রি করতে দেখা যায়।ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী কিনে তারা ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজে।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মেহেদি পাতার কিছু গুনাগুন সম্পর্কেঃ-
১.মাথার খুশকি সমস্যা দূর করে।
আমরা কম বেশি সকলেই খুশকি সমস্যায় ভুগী। খুশকি দূর করতে মেহেদি পাতা বেশ উপকরী।লেবু, সরিষা তেল, মেথি, মেহেদি পাতা একসঙ্গে যোগ করে একটি পেষ্ট তৈরি করপ চুলে ব্যবহার করুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলুন। এটি খুশকি দূর করে চুলকে করবে আরও ঝলমলে সুন্দর।
২.মাথার যন্ত্রণা উপষম করে। যন্ত্রণা উপষম করে।
মেহেদি ফুল মাথাব্যথা দূর করতে সাহায্য করে। মেহেদি ফুল পেস্ট করে এর সঙ্গে ভিনেগার মিশিয়ে নিন। এটি কপালে অথবা ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন। এছাড়া মেহেদি ফুল হাতের কাছে না পেলে আপনি মেহেদি পাতার পেস্টও ব্যবহার করতে পারেন।
৩.পিঠের বা কাঁধের ব্যাথা সারাতে সাহায্য করে।
পিঠের বা কাঁধের ব্যথা সারাতে মেহেদি পাতার রসের সাথে গরম সরিষার তেল মিশিয়ে মালিশ করলে ব্যথা কমে যায়।
৪.পায়ের গোড়ালি জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে।
মেহেদি পাতা ভিনেগারে সহযোগে ভিজিয়ে এক জোড়া মোজার ভিতরে রেখে দিন। এবার এই মোজাটি পায়ে সারারাত পরে থাকুন। এটি আপনার পায়ের জ্বলাপোড়া কমিয়ে দিবে।
৫.হাত-পায়ের নখের কোনা মরে বা নষ্ট হয়ে জাওয়া সমস্যা দূর করে।
মেহেদি পাতা পাতায় বেটে হাতে দিলে এসব সমস্যা দূর হয়ে যাই।
৬.ব্রন সমস্যা দূর করে মেহেদি পাতা।
মেহেদি পাতার রস, কাঁচা হলুদ ও নিম পাতা বেটে মুখে ব্যবহার করলে ব্রন সমস্যা দূর হয়ে যাই।
৮.চুলকানি, খোশপাঁচড়া দূর করে।
পাতা বেটে পুরানো একজিমায়/ঘাঁ,চুলকানি, খোশপাঁচড়া স্থানে লাগলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
৯.রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে।
মেহেদি পাতা হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। মেহেদির রস বা বীজ নিয়মিত খেলে কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম ও রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে। এটি ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে হার্ট অ্যাটাক ও স্টোকের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
১০.পা ফাটা ও পায়ের চামড়া ওঠার সমস্যার সহায়তা করে।
শীতকালে পা ফাটা সমস্যা দেখা দেয় অনেকের। তবে কারো কারো বারো মাসই পা ফাটার সমস্যা থাকে। এ ছাড়া চামড়া ওঠার সমস্যাও থাকে । মেহেদি পাতা বেটে ফাটা জায়গায় পুরু প্রলেপ দিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে পা ফাটা প্রতিরোধ হবে।
মেহেদি পাতা মানব জীবনে অনেক রোগের ক্ষেত্রেও উপকারে আসে।শুধু হাত রাঙাতে নয় অনেক ভেষজ গুণে গুণ সম্পূর্ণ এই উপকারী পাতাটি।