স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু করে ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখা। সংগঠনটির বর্তমান সদস্য প্রায় ৫৮৪ জন। দীর্ঘ এ পথচলায় নির্বাচনের মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন অনেকেই। কেউ বয়ে এনেছে সুনাম আর কেউ কেউ সংগঠনটির চেয়ার দখল করেই সে সুনাম ক্ষুন্ন করেছেন।
গতকাল বুধবার (৩১ আগস্ট) বিকালে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার কার্যালায়ে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক চলাকালে দুই শিক্ষকের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় এক শিক্ষক চেয়ার ছুড়ে মারলে অপর দুই শিক্ষক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাই, ঐ দিন শিক্ষক সমিতির অডিট কমিটি গঠন নিয়ে সভা চলাকালে মাঝদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাসানুজ্জামান ও কালিকাপুর আব্দুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইব্রাহিম হোসেন মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাসানুজ্জামান ইব্রাহিম হোসেন কে উদ্দেশ্য করে কাঠের চেয়ার ছুড়ে মারলে তাতে মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান ও এয়ারপোর্ট একাডেমীর প্রধান শিক্ষক এবং সমিতির সহ সভাপতি রেজাউল ইসলাম রকি আঘাতপ্রাপ্ত হন। দায়িত্বশীলদের এমন আচারনে উপস্থিত শিক্ষকগন তাৎক্ষনিক হতভম্ব হয়ে পড়েন। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে হাসানুজ্জামান দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
এদিকে মাঝদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হাসানুজ্জামান জানান, তেমন কিছুই ঘটে নি, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো। পরে তা মিমাংসা করা হয়েছে। তবে কালিকাকাপুর আব্দুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইব্রাহিম হোসেন বলেন, হাসানুজ্জামান আমাকে উদ্দেশ্য করে চেয়ার ছুড়ে মেরেছিল, আমি তাৎক্ষনিক সরে যাওয়ার তা উপস্থিত অন্য শিক্ষকদের গায়ে লাগে।
মানিকনগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, দুজনের হাতাহাতি ঠেকাতে গিয়ে সামান্য আঘাত প্রাপ্ত হয়েছি। ঘটনাটি খুব দুঃখ জনক।
সমিতির বর্তমান সভাপতি, ফজলুল জানান, বৈঠকের বিরতিকালীন সময়ে আমি নামাজে গিয়েছিলাম। পরে নামাজ থেকে এসে উপস্থিত শিক্ষকদের কাছে ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি সমাধানের জন্য তাৎক্ষনিক হাসানুজ্জামান কে একাধিক বার ফোন করেছি তবে সে ফোন রিসিভ করে নি। বিষয়টি এখনো মিমাংসা হয় নি। দ্রুতই মিমাংসা করা হবে।
এদিকে শিক্ষক সমিতির এমন কাদা ছুড়াছুড়িতে পুরো উপজেলায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক সমিতির এমন কাদা ছুড়াছুড়ির বিষয় নতুন কিছু নয়। তবে এর পেছনের কারন বিশাল অঙ্কের ব্যাংক একাউন্ট বলে ধারনা করেন সবাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক জানান, সমিতির নির্বাচনের পর থেকেই এই কাদাছুড়াছুড়ি আরও বেশি হয়েছে। বিগত কমিটির অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে বর্তমান কমিটির কাছে হিসেব না দেওয়া নিয়ে বহু নাটকিয়তা চলে বেশ কিছু দিন ধরে। পরে দায়িত্বশীল দের মধ্যস্ততায় তা সমাধান হয়েছে।
শিক্ষকরা জানান, সমিতির একাউন্টে কোটি টাকা না থাকলে নির্বাচন নিয়েও এত সমস্যা হতো না আর চেয়ার দখল নিয়েও এত ঝামেলা হতো না। তবে, সমিতির একাউন্টের কোটি টাকা কি শুধু মাসিক চাঁদা নাকি শিক্ষার্থীদের কাধে চাপানো অতিরিক্ত নোট গাইডের কমিশন ??