পাবনায় চাঁদাবাজি, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসাসহ বিস্তর অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে পাবনা সদর পৌর আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ৩৫ মামলার আসামী এ এইচ এম রুবেলের বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলছে এই কাউন্সিলার রুবেলের ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী। যাদের হাতে জিম্মি হয়ে পরেছে পাবনা মানসিক হাসপাতাল, বিসিক ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী ।
হত্যা,অস্ত্র, ব্যাংক ডাকাতি,মাদক,চাঁদাবাজি,দুদুকের ৬টি সহ প্রায় ৩৫টি মামলার আসামি রুবেলের ছত্রছায়ায় এলাকায় কিশোর গ্যাং সহ গড়ে উঠেছে একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ,এই রামরাজত্বে নিয়ন্ত্রণ করে তার আপন ছোটভাই ফয়সাল ইসলাম রোজ। এবং ৩০ জনের সদস্য নিয়ে গঠিত ভয়ংকর কিশোর গ্যাং,যার নিয়ন্ত্রণ করে রোজ এর ছেলে ফাহিম।
এই কাউন্সিলার তার সন্ত্রাসী বাহিনী ও কিশোর গ্যাং দিয়ে এলাকায় অস্ত্র, মাদক ব্যাবসা ও চাঁদাবাজি পরিচালনা করে আসছেন। এমনকি মানসিক হাসপাতাল, বিসিক ও মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের অবস্থিত পরিত্যাক্ত ভবনগুলো তাঁদের জন্য হয়ে উঠেছে মাদক কেনাবেচা ও মাদক সেবনের নিরাপদ আশ্রয়।
কাশিপুর মোড়ের একাধিক ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা জানান, পাবনা মানসিক হাসপাতালের প্রতিটি কাজ করে রুবেলের ক্যাডার বাহিনী। তাদের ভালো মন্দ দেখার কেউ নেই।নিয়মিত চাঁদা না দিলে, রুবেলের কথা না শুনলে তাদের উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতে হয় অনেককেই। অবৈধ পথে আয় করা এই অর্থই তার অপকর্মের শক্তি।
কলেজ ক্যাম্পাসে মাদক সেবনে বাধা দেওয়ায়
গত বছর রুবেলের সন্ত্রাসী বাহিনীর ৮জন প্রকাশ্যে মেডিকেল কলেজের শাকিল শেখ নামে এক স্টাফকে জিআই পাইপ ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মম ভাবে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়। রক্তাত্ব অবস্থায় পরে থাকলে পরবর্তীতে গুরুতর আহত অবস্থায় শাকিলকে তার সহকর্মীরা উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে নাম না প্রকাশ শর্তে পাবনা পৌর সভার ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, মাদক সেবন ও বেচাকেনায় বাঁধা দেয়ায় আমার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে রুবেলের সন্ত্রাসী বাহিনী কুঁপিয়েছিল। অস্ত্র ও মাদক সহ এমন কোন ব্যবসা নেই যে সেটা রুবেলের নেতৃত্বে তার ছত্রছায়ায় থাকা ক্যাডাররা করে না।
এ বিষয়ে বুদের হাট এলাকার যুবলীগ নেতা আজাদ শেখ অভিযোগ করে বলেন, এই রুবেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। বিভিন্ন অপকর্ম করেও রুবেলের অনুসারী হওয়ায় বার বার পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। এ পরিস্থিতিতে রুবেলের অত্যাচার থেকে মুক্তি চায় বিসিক, কাশিপুর,মানসিক হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ এলাকার সাধারণ মানুষ।
অভিযুক্ত পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ এইচ এম আরিফুল রুবেলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ছত্রছায়ায় কোনো বাহিনী তৈরী হয় নি, আমি মাদক বা অস্ত্র ব্যবসার সাথেও সম্পৃক্ত নই। আর মেডিকেল কলেজে যাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছিল সেই ছেলেটা আমারই কর্মচারী তাকে আমি কেন মারতে যাব। রাজনৈতিক ভাবে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতেই প্রতিপক্ষ ও তার লোকজন এমন অভিযোগ করছে।তবে নিজের বিরুদ্ধে মামলার কথা তিনি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশ এসব অপকর্মে জড়িত আসামীদের ধরতে অভিযান অব্যহত থাকার কথা বললেও দৃশ্যমান কোনো ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয় নি।