বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান মরিয়ম বেগম ।। বুবুর চোখে জল।। বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ, প্রেমিক সেলিম কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব ২০৪১ সালের আগেই পাবনা স্মার্ট জেলা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে- রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার  ঈশ্বরদীতে মালবাহী দুইটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ কুরিয়ার সার্ভিসে গাঁজা পরিবহনের সময় আটক-১ শ্যামলী বাসে আস্থা রেখে সর্বস্ব খোয়ালেন গরু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ পণ্যের দাম, নামমাত্র বাজার মনিটরিং এর ফলাফল শূণ্য সিলেট সদর উপজেলার নির্বাচনে ‘মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান’ পদে প্রার্থী  কাকলী বঙ্গবন্ধুর  জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত 

করোনা এবং আমাদের পৃথিবী

দেওয়ান সবুজ / ৪১৬ বার পঠিত
আপডেট : শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১, ১২:০৭ অপরাহ্ণ

১৭২০ সালে মহামারী প্লেগ। ১৮২০ সালে ইয়েলো ফ্লু এবং কলেরা ১৯২০ সালে স্পেনিস ফ্লু। প্রতি একশ বছরে মহামারী হানা দিয়েছে মৃত্যুর মিছিল বইয়ে দিতে পৃথিবীর মানুষের মাঝে।

সে সময়ও দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরিধান করা নিরাপত্তার জন্য মানুষ ব্যবস্থা নিত। এখনো সেই একই পদ্ধতিতে নিরাপদ থাকার জন্য বলা হচ্ছে। এত বছর পরেও নতুন কোন পদ্ধতি নতুন কোভিড ১৯ এর জন্য আমাদের নাই।

প্লাজমা চিকিৎসা সে পুরানো মহামারীর সময় আবিস্কার হয়েছে। রক্তরস,রক্তের শ্বেত কনিকা এবং রক্তকনিকা আলাদা করার পর রক্তের যে উপাদান পাওয়া যায় যাকে প্লাজমা বলা হয়। ভালো হয়ে যাওয়া রোগীর এই প্লাজমা রোগীর শরীরে ঢুকিয়ে চিকিৎসা করা হতো। শরীরে এন্টিবডি তৈরি করা। এখনও সেই পদ্ধতিতে এই করোনা ভাইরাসের রোগীদেরও চিকিৎসা করা হচেছ। অনেক মানুষের চিকিৎসার জন্য প্রায় আটশ জন ভালো হওয়া রোগীর প্লাজমা দরকার। প্লাজমা সংগ্রহ করে তা রোগীর শরীরে ঢুকিয়ে দিয়ে রোগীকে ভালো করার চেষ্টা চালাচ্ছেন ডাক্তাররা প্রাচীন প্রদ্ধতি অবলম্বন করে।
এর সাথে রোগ ভালো করার জন্য নানা রকম ঔষধ, প্রচলিত যা আছে তার ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। তবে কোন ঔষধই প্রকৃত কোভিড ১৯ এর চিকিৎসার ঔষধ নয়।
মূলত অক্সিজেন এবং ভ্যান্টিলেশন সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয় শ্বাস কষ্ট শুরু হলে। এছাড়া নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা, জ্বর, কাশি ম্যালেরিয়া ইত্যাদি বিভিন্ন রোগের পরীক্ষিত ঔষধ কোভিড ১৯ আক্রান্তর জন্য ব্যবহার করছেন ডাক্তাররা। যেহেতু রোগীকে আরাম দেয়ার জন্য কিছু একটা ঔষধ দিতে হবে এবং এখন পর্যন্ত কোভিড ১৯ এর জন্য কোন ঔষধ নাই। কিছু সমস্যার মিল দেখে সে ভাবে রোগীকে ঔষধ দেওয়া হয়। কিন্তু সব ঔষধ সব রোগীর জন্য সঠিক ভাবে কাজ করে না। কেউ কেউ এই ঔষধে ভালো হয়ে যাচ্ছেন। কেউ মারাও যাচ্ছেন। আবার কোন ঔষধ ছাড়া অনেকে ঘরে থেকেও ভালো হচ্ছেন।

মানুষের দেহটা আসলে মানুষের একক নিজস্ব সত্তার মতনই ইউনিক। মানুষ যেমন আলাদা চেহারা, আলাদা গঠন প্রকৃতির। মানুষের ভিতরের কলকব্জাও তেমন আলাদা। অথচ আমরা সর্বত ভাবে গণ করে ফেলি সব মানুষকে এক ভাবি। এক ঔষধ একজনের জন্য যেমন কাজ করে অন্যজনের জন্য তেমন কাজ করে না।
একজনের ডায়বেটিস থাকলে বা হৃদরোগ থাকলে এ্যাজমা বা রক্তচাপ থাকলে ক্যান্সার থাকলে বা কোন সমস্যা না থাকলে তার জন্য যেমন ভিন্ন রকম খাবারে দরকার হয়, ঔষধও তেমন ভিন্ন মাত্রায় প্রতিক্রিয়া করে ভিন্ন মানুষের শরীরে।

নতুন একটি ঔষধের নাম শোনা যাচ্ছে ডেক্সামেথাসন। ডেএক্সামেথাসন একটি স্টেরয়েডজাত ঔষধ। এটি করটিসানের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালি। এই ঔষধ সাধারণত এন্ট্রিইনফ্লামেটরি,স্কিনের রোগ,ক্যান্সার,শ্বাসতন্ত্রের রোগ ও এন্ড্রক্রাইনের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যাবহার করা হয়। মানব দেহে ডেক্সামেথাসনের প্রভাবে ভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে মানুষের শরীর ভেদে। কারো সুগার বেড়ে যাবে কারো কমে যাবে। কেউ ভালো হলেও কেউ মারাও যাবে একই ঔষধের প্রয়োগে। যাদের অবস্থা গুরুতর ভ্যন্টিলেশনে আছে তাদের উপরই এই ঔষধ প্রয়োগ করা হচ্ছে ডেস্পারেটলি। এদের মারা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সেখান থেকে শরীর অনুযায়ী কেউ কেউ ভালো হয়ে আসছেন।
স্টেরয়েড আসলে হরমোন বৃদ্ধি করে। পেশী তৈরিতে সাহায্য করে বলে সাধারনত খেলোয়াররা স্টেরয়েড নিতে পছন্দ করে। অনেক খেলায় তাদের শরীরে স্টেরয়েড ডোজ পাওয়ার পর খেলা থেকে নিষিদ্ধও হয়ে যায়।
আর আমাদের দেশে স্টেরয়েড আইটেমের ডেক্সামেথাসন গ্রুপের বিভিন্ন ইনজেকশন গবাদিপশু মোটাতাজা করার জন্য ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে কোরবানীর সময় এই কাজটি অনেকেই করে। লোকে মোটাতাজা পেশীবহুল গরু পছন্দ করে। অনেক শুকনা, চিকন মানুষও স্টেরয়েড ব্যবহার করে মোটা হওয়ার জন্য।
কোভিড ১৯ আক্রান্ত কেউ কেউ হয় তো ডেএক্সামেথাসন প্রয়োগে ভালো হয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু পরবর্তিতে তাদের নানান রকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ভুগতে হবে।
আসলে কোভিডের জন্য প্রকৃত ঔষধ, ভ্যাকসিন আবিস্কার না হওয়া পর্যন্ত কোন ঔষধই এর জন্য প্রকৃত ঔষধ না। আপাতত অন্ধের যষ্টির মতন এটা সেটা ব্যবহার হচ্ছে।
বর্তমান সময়টা বাংলাদেশে করোনার পিক টাইম চলছে। গরমে করোনা হবে না এমন তথ্য কাজ করে নাই। হিসাব এবং স্বাস্থ্য সেবা এবং দূরত্ব রাখার কোন নিয়ম সঠিক ভাবে না মেনে ঠিক কত আক্রান্ত কি হচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। যেহেতু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতাকে পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতন সব ব্যবস্থা নিয়ে খুশি ছিল কতৃপক্ষ এবং অনেক মানুষও কেয়ার করেনি। তবে দক্ষ মানুষের আশংকা অনুযায়ী সে রকম কিছু ঘটছে দেখা যাচ্ছে।
কোন কারণ ছাড়া অনেকে মারা যাচ্ছেন । অনেকে বলছেন হার্ট এ্যাটাক বা অন্য কিছু। ব্লাড ক্লট বেঁধেও হার্ট এ্যাটাক হচ্ছে করোনা থেকে। আসলে করোনার সিস্টেম বিভিন্ন রকম। অনেকে আক্রান্ত হয়েও বোঝতে পারেন না নিজেই ভালোও হয়ে উঠছেন। আবার অনেকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন সাথে সাথেই। সবটাই নির্ভর করছে মানুষের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কেমন তার উপর।

শরীর অসুস্থ হলে মানুষের শরীর নিজেই তা ঠিক করতে ব্যাস্ত হয়। শরীর নিজে নিজেই সেরে উঠে। ঔষধ দিয়ে এই সেরে উঠার সময়টাকে দ্রুত করি এবং অসহ্য যন্ত্রনা কমানোয় সাহায্য করি আমরা। ঔষধ নেয়ার ফলে আমরা দ্রত যন্ত্রনার উপসম পাই কিন্তু শরীরের নিজস্ব কার্য ক্ষমতাকে নষ্ট করে দেই। শরীর যে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শুরু করেছিল সে কাজটা ঔষধ দেয়ার ফলে শরীর বিভ্রান্ত হয়ে যায় এবং নিজের কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এবং আবার নতুন করে অভ্যস্থ হয়ে কাজ শুরু করার জন্য শরীরের সময় লাগে।
এটা হলো শরীরের প্রাকৃতিক নিয়ম তবে বর্তমান সময়ে দ্রুত ভালো হওয়া জন্য মানুষ ঔষধ খাওয়াই পছন্দ করেন। অনেকে আবার মুড়িমুড়কির মতন ঔষধ খাওয়াও পছন্দ করেন কোন কারন ছাড়া। এতে শরীরের নিজস্ব কাজ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।

করোনার যেহেতু কোন ঔষধ নাই তাই করোনা যেন কিছুতেই নাক, মুখ, চোখ দিয়ে আপনার শরীরের ভিতর যেতে না পারে সেজন্য মুখে মাস্ক পরা। অন্যের থেকে দূরত্ব রাখা এবং বারেবারে বিশেষ করে বাইরে থেকে এসে হাত ধোয়াটা খুব জরুরী। কোন কারণ ছাড়া নিজে নিজে কোন ঔষধ না নেয়াটাই ভালো।

লেখকঃ সংবাদ কর্মী

gdewun@gmail.com


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!