১৯ অক্টোবর রোজ মঙ্গলবার বিকাল ৩:৩০ মিনিটে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ চা বোর্ড হাতিবান্ধা শাখার উদ্যোগে, জেলা প্রশাসন লালমনিরহাট এর সহযোগিতায় চা চাষ সম্প্রসারণে সমস্যা ও সমাধান বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ চা বোর্ড।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবিদা সুলতানা, পুলিশ সুপার, লালমনিরহাট এবং এডভোকেট মতিয়ার রহমান, চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদ, লালমনিরহাট।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার বিভিন্ন এলাকার চা চাষীগণ সহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জনাব আরিফ খান, পরিচালক, লালমনিরহাট চা প্রকল্প, হাতিবান্ধা শাখা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়, এরপর জেলার বিভিন্ন চা চাষীগণ সমস্যার কথা প্রধান অতিথির সামনে তুলে ধরেন, এবং তা সমাধানের জন্য বিশেষভাবে সহযোগিতা কামনা করেন।
চা চাষীগণ তাদের চা আবাদে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যাগুলো হলো:-
১। চা চাষীদের মাঝে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা।
২। বিক্রয় কেন্দ্র ও চা কারখানা স্থাপন করা।
৩। পর্যাপ্ত পরিমাণে কীটনাশক ও সারের ব্যবস্থা করা।
৪। চা পরিবহনের ব্যবস্থা করা।
৫। চা এর সঙ্গে পর্যটন ও রিসোর্ট নির্মাণ করাসহ ইত্যাদি সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে প্রধান অতিথি মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি আপনাদের সকল সমস্যার কথা শুনলাম এবং তা অতি তাড়াতাড়ি বাস্তবায়ন করার জন্য চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। তিনি লালমনিরহাটে চা চাষে ভবিষ্যত সম্ভাবনা ও সমস্যার সমাধানে বলেন, লালমনিরহাটে ২০০৫ সালে চা চাষে ক্ষুদ্র চাষীদের নিয়ে কর্মসূচি চালু করা হয় আর সে পরিপ্রেক্ষিতেই আজকে লালমনিরহাটে ১৫৭ একর জমিতে চা চাষ করা সম্ভব হয় এবং তা শুধু ক্ষুদ্র চা চাষীদের জন্যই সম্ভব হয়েছে।
এর পরবর্তীতে এখানে যে ক্ষুদ্র প্রজেক্টগুলো নেওয়া হয়েছে তাও শুধু এই ক্ষুদ্র চা চাষীদের জন্যই। এখানে স্বল্প মূল্যে চা চারা বিতরণ করা হচ্ছে। আর ইতিমধ্যেই এ প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে গেছে। এখন শুধু চা চাষীদের বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুল চালু রেখেছি এবং আজকে আমি যে বাগানগুলো ঘুরে দেখেছি, সেগুলো আমার চাহিদার চেয়েও অনেক ভালো হয়েছে ইনশাআল্লাহ, আশা করি সামনে আরো ভালো দেখতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, এ জেলায় ভবিষ্যতে একটি স্থায়ী অফিস হবে, এবং চা চারার নার্সারি থাকবে, তিনি এ জেলার চা বাগানগুলি পরিদর্শন করে বলেন পপঞ্চগড়, সিলেট, শ্রীমঙ্গল এর মতই এ জেলা এক সময় রুপ নিবে, সেই লক্ষ্যেই আমরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, চা চাষে ২% হারে ঋণের জন্য বিএডিসির মাঠ পর্যায়ে যে কর্মকর্তাগণ রয়েছেন, তারা চা চাষীদের সাথে সমন্বয় করে স্বল্প সুদে কিভাবে ঋণ বিতরণ করা যায় তা নিয়ে কাজ করছেন। আমি সব মিলিয়ে আশা করছি এক সময় এ জেলাটিও অন্যান্য চা আবাদী জেলার মতই হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আবিদা সুলতানা, জেলা প্রশাসক, লালমনিরহাট ও জনাব মো. আবু জাফর, জেলা প্রশাসক, লালমনিরহাট মহোদয়।
সবশেষে সকল চাষীদের সুন্দর বাগান করার জন্য আরো কিছু মূল্যবান কথা বলে অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. আবু জাফর, জেলা প্রশাসক, লালমনিরহাট।