পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ও সরকারী বিধিনিষেধ অমান্য করে কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রয় করছেন মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার জাহিদ হোসেন তারা মালিথা।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঈশ্বরদীর মুলাডুলি ইউনিয়নের আরকান্দি ও পতিরাজপুর মাঠে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। মাটি কাটা স্কেভেটর অপারেটর ও ট্রাক্টর চালকরা জানান, উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহিদ হোসেন তারা মালিথা বিগত প্রায় ১৫-১৬ দিন ধরে নিজের ১০-১২ বিঘা ধানের জমি থেকে মাটি কেটে ইট ভাটাসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করছেন। মাটি কাটা ও বিক্রয়ের কাজ করছেন মুলাডুলির ঢুলটি এলাকার মাটি ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান।
তারা আরও জানান, মাটি কাটার জন্য মাটি ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান আমাদের ভাড়া করে এনেছেন। ফসলী জমির মালিক তারা মেম্বার। আমাদের দায়িত্ব মাটি কেটে ট্রাক ও ট্রাক্টরে তুলে দেওয়ার। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, তারা মেম্বার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি নিজের ফসলের জমিতে পুকুর খননের নামে মাটি কেটে বিক্রয় করছেন। তার পুকুরে পানি জমলে পাশে থাকা তাদের জমি ভেঙ্গে পুকুরে পড়বে। তখন বাধ্য হয়ে কম মুল্যে তারা মালিথার নিকট জমি বিক্রয় করে দিতে বাধ্য হতে হবে। তাছাড়া মাটি ভর্তি ট্রাক ও ট্রাক্টর নিয়ে অন্যের ফসলী জমি দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা কিছুই বলতে পারছি না। কারণ পুলিশ প্রশাসনের লোকজন কয়েকবার ঘটনাস্থলে এসে ঘুরে গেছেন। কিন্তু বন্ধ হয়নি মাটি কাটা। বীরদর্পে চলছে মাটি কাটা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, ফসলী জমি থেকে কিংবা পুকুর সংস্কার করতে হলেও ইউএনও মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করতে হয়। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়ার পর জেলা প্রশাসক মাটি কাটার অনুমোদন দেন। কিন্তু মুলাডুলি ইউনিয়নের মেম্বার তারা মালিথাসহ যারা মাটি কেটে বিক্রয় করছেন, তারা সম্পুর্ন অবৈধভাবে কাজটি করে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জানান, ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রয় করা অপরাধ। বিষয়টি প্রশাসনের দেখার কথা। আমি শুধু এই বিষয়ে অভিযোগ করতে পারি। এছাড়া মাটি কাটা বন্ধের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।
মাটি ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান জানান, জমিটি তারা মেম্বারের। আমি চুক্তিতে মাটি কিনে বাইরে বিক্রয় করছি। মাটি কাটার জন্য তারা মেম্বার কারও নিকট থেকে অনুমোতি নিয়েছেন কিনা আমার জানা নেই। তবে আমি মাটি কাটার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দিয়েছি।
মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি মেম্বার জাহিদ হোসেন তারা জানান, আমার জমির মাটি আমি কাটবো। এখানে অনুমোতি নেওয়ার কি আছে। তাছাড়া আমি সকলকে ম্যানেজ করেই মাটি কাটছি।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, মাটি কাটা বন্ধের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা উপজেলা প্রশাসনের। তারা আমাদের নির্দেশ দিলেই আমরা পদক্ষেপ নিতে পারবো। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস জানান, ম্যানেজ করে নয়। আমি ছুটিতে ছিলাম। মাটি খাদকরা এই সুযোগটা গ্রহন করেছে। এসিল্যান্ডকে পাঠিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।