শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ১২:০০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
রাশিয়ায় বিশ্বের একমাত্র ভাসমান এনপিপিতে পিয়ার রিভিউ মিশন সম্পন্ন আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থী রানা সরদারকে শোকজ ঈশ্বরদীতে নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে কোনঠাসা করতে হামলার অভিযোগ ঈশ্বরদীতে এসএসসি পরীক্ষায় মোট পাসের হার- ৮৮.৬১ শতাংশ সলিমপুরে  মিন্টুর নির্বাচনী মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  ঈশ্বরদীর পৌর মেয়র ইসাহক মালিথার বিরুদ্ধে অন্যায়-অত্যাচারের অভিযোগ ঈশ্বরদীর ২ ইট ভাটায় অভিযান// দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় ঈশ্বরদীতে ঘরবাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত  ঈশ্বরদীতে অবৈধ বালু মহল চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব ঈশ্বরদীতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মেম্বারের কৃষি জমির মাটি বিক্রয় 

এ্যাসোপ নামে এজিওতে জমানো টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের

বুলবুল আহমেদ বুলু, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি / ২৪৫ বার পঠিত
আপডেট : বুধবার, ২০ অক্টোবর, ২০২১, ৬:২৫ অপরাহ্ণ

‘ভিক্ষার জমানো টাহা মুই এনজুত থু চুনো বাপো মোর অসুখ হচিলো ১০০ ডা টাহা চাচুনো ওরা মোক দায়নি বাপো!’ বলতে বলতে আবেগে কেঁদে ফেলেন ভিখারী আলেজান বিবি। ভিক্ষা করে আলেজান বিবি ২০ হাজার টাকা এ্যাসোপ নামে এজিওর কোলা শাখায় সঞ্চয় হিসেবে জমা রেখেছিল।

নওগাঁর বদলগাছীতে দিনের পর দিন অফিসের সামনে ঘুরেও সঞ্চয়ের জমানো পাওনা টাকা ফেরত না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এনজিও (এ্যাসোপ) এর খামার আক্কেলপুর শাখার বিরুদ্ধে।

উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের রনাহার গ্রামে প্রধান কার্যালয় দেখিয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি থেকে সনদ নিয়ে শুরু হয় এনজিওটির পথচলা। সনদ নং (০১৭১৭-০০৫২৯-০০১৭৪)

এ্যাসোপ এনজিও’র পরিধি বাড়াতে খামার আক্কেলপুর শাখা অফিস চালু হয়। এই শাখা চালুর হওয়ার পর থেকে এলাকার প্রায় ২০০ জন গ্রাহক তাদের টাকা এনজিওতে সঞ্চয় হিসেবে জমা রাখেন।

ক্ষুদ্র ঋণ ও সঞ্চয় আদায়কারী প্রতিষ্ঠানটি কোলা খামার আক্কেলপুর শাখার প্রায় ২০০ জন অসহায় ও দরিদ্র গ্রাহকের কাছে থেকে সঞ্চয় হিসেবে টাকা নেয়। গ্রাহকের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করার চেষ্টায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের টালবাহানা করে আসছে গত কয়েক বছর ধরে।

আওতায় থাকা অসহায় ও দরিদ্র গ্রাহকদের টাকা আজ দেব, কাল দেব বলে বিভিন্নভাবে টালবাহানা করছেন কোলা শাখার কর্মী শাহিনুর ইসলাম।

কোলা ইউনিয়নের কোলা খামার আক্কেলপুর শাখা অফিসে গত ৪ অক্টোবর এই শাখার গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেছিলেন দায়িত্বরত শাহিন ইসলাম। কিন্তু ওই দিন গ্রাহকদের সঞ্চয়েরর টাকা ফেরত না দিয়ে অফিসের কাগজপত্র সুকৌশলে নিয়ে যাবার সময় উত্তেজিত গ্রাহকরা অফিসের দায়িত্বরত শাহিনুর ইসলামসহ এনজিওটির বিভিন্ন শাখার পাঁচজনকে নজরবন্দি করেন।

পরে এ্যাসোপ এর পরিচালক এসে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে চলতি মাসের ২৪ তারিখে গ্রাহকের পাওনা সঞ্চয়ের টাকা ফেতর দেওয়ার অঙ্গীকার করে নজরবন্দি থাকা কর্মীদের নিয়ে যান।

ভুক্তভোগী গ্রাহক ভিক্ষুক আলেজান বিবি বলেন, ‘দুনিয়ায় আমার বাটাপুত কেও নাই, মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চায়ে চুন্তে খাবার খাই। আর মাসে মাসে বিধবা ভাতার ২০ হাজার টাকা জড়ো করে এই এনজিওতে থুচুনো বাবা। কিন্তু মোর অসুখ হচিল বাপো, ঔষধ খাওয়ার জন্য ১০০ টাকা চানু ওরা মোক টাকা দিলো না বাপো। এখন অফিসের ঘর বন্ধ থাকে, কেও আসে না।’

ভান্ডারপুর গ্রামের মাধবী রাণী বলেন, ‘ছয়বছর পূর্বে মাসে ২০০ টাকা করে ডিপিএস এর টাকা বাড়ি গিয়ে নিয়ে আসতো এবং ৪ হাজার টাকা সঞ্চয় রেখে ছিলাম। আমার সঞ্চয়ের টাকা ছয় বছর পরে ফেরত দিতে চেয়ে হিসাব বহিঃ নিয়ে আসেন এ্যাসোপের কর্মী। এরপরে তাকে পাশ বহিঃ বা জমাকৃত সঞ্চয় এবং ডিপিএস এর টাকা দিনের পর দিন অফিসে ঘুরেও ফেরত পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

উজ্জল পাহান ও সুবাস পাহান বলেন, ৬ বছর থেকে আমাদের বিভিন্নভাবে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা মুখে বলে কিন্তু আমাদের টাকা ফেরত দিচ্ছে না। তাদের অফিস বন্ধ থাকে এবং কিস্তির টাকা আদায়কারী মাস্টার পর্যন্ত নাই।

তাঁরা বিভিন্ন তাল বাহানা দিয়ে সঞ্চয় এর পাশ বহিঃ পর্যন্ত নিয়ে গেছে। এমতাবস্থায় অনেক সদস্যের কাছে পাশবহিঃ নাই। সেইসব গ্রাহকরা টাকার নেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছে তাদের টাকা না দেওয়ার ভীতিও দেখান অফিসের কর্মী।

এ্যাসোপ এনজিও কোলা শাখার মাঠ কর্মী শাহিনুর ইসলাম, অন্য শাখার আব্দুর রশিদ, জাহাঙ্গীর এবং নয়ন বলেন, করোনাকালে আমরাই ঠিকমত বেতন পাই না, তাই অফিসে আসা হয় না। আর প্রধান অফিস থেকে সঞ্চয় এর বা ডিপিএস এর টাকা গ্রাহককে ফেরত না দিলে আমরা কোথা থেকে ফেরত দিবো?

ইউপি সদস্য হারুন অর রশিদ বলেন, এনজিও (এ্যাসোপ) এর পরিচালক বা প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বিভিন্নভাবে সময় নিয়েছে। পরে তাদের সাথে সময় অনুসারে কথা বললে বারবার শুধু সময় নিয়েছে। তবে কোনো সুরাহা করেন না এ্যাসোপ এনজিও পরিচালক। কিন্তু পরে গ্রাহকেরা এ্যাসোপের মাঠ কর্মীদের খামার আক্কেলপুর অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

পরে এনজিও পরিচালক বলেন, আগামী ২৪ অক্টোবর সকল গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

এ্যাসোপ এনজিও এর পরিচালক তানভীর হোসেন বলেন, আমাদের কোনো রেকর্ড নেই, গ্রাহকের টাকা অত্মসাৎ করার। প্রতিটি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিবো কিন্তু একটু সমস্যা হয়েছে। সারা বিশ্বের মহামারী বা দেশের করোনা ভাইরাস এর কারণে এই সমস্যা হয়েছে। তবে পর্যায়ক্রমে সবার টাকা ফেরত দেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!