ঢাকার মগবাজারের একটি ভবনে বিস্ফোরণে অন্তত সাত নিহত হয়েছে। শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে এবং গুরুতর আহত ৬৬ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট এলাকায় ভবনের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন উপপরিচালক (ঢাকা) দিনমনি শর্মা, সহকারী পরিচালক (ঢাকা) ছালেহ উদ্দিন আহমেদ, উপ-সহকারী পরিচালক (ঢাকা জোন-০১) মো. বজলুল রশিদ ও ও্যার হাউজের পরিদর্শন মণ্ডল।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার মো. মাহফুজ রিভেঞ্জ আজ সোমবার (২৮ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এ ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মগবাজারের ওয়্যারলেস গেট এলাকায় অবস্থিত ‘রাখি নীড়’ নামের একটি তিনতলা ভবন ধসে নারী ও শিশুসহ অন্তত সাতজন নিহত হন। আহত হন ওই ভবনের বাসিন্দা, সামনের রাস্তায় থাকা বাসযাত্রী, পথচারীসহ শতাধিক। এর মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া বেশ কয়েকজন ঢামেকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিস্ফোরণে দগ্ধদের অনেকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে রাসেল (২৪), জাকির হোসেন (৪০), স্বপন (২২), নয়ন (৩২), মোতালেব (৪০), আবুল কালাম (৩৫), মো. পইমল হোসেন (৪০), মোস্তাফিজ (৪৫), নবী (২৮), আজাদ (৩৫) ও ইমরান। এদের মধ্যে স্বপন নামে একজন মারা গেছেন। মৃত অবস্থায় দুজনকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে, তাদের দুজনেরও নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। বেশ কয়েকজন চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন।
ভবনটির কোথায় থেকে কিভাবে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ফায়ার সার্ভিস ও ডিএমপি কমিশনারের ধারণা, গ্যাস থেকে এই বিস্ফোরণ হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, কোনো ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত হয়েছে। কেউ বলছেন, কোনো ভবনের জেনারেটর কিংবা এসি থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে।
বিষ্ফরণের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মগবাজার থেকে মৌচাকের আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর রাখি নীড় ভবনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ভবনটির নিচের অংশে বিস্ফোরণের পর দেবে যাওয়া জেনারেটর বা গ্যাসলাইন থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশপাশের অর্ধশতাধিক ভবনের কাচ ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ায় বৈদ্যুতিক কোনো গোলযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।