পাবনার ঈশ্বরদীতে বাবা কালাচাঁদ ফকিরের ১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চলছে ওরশ। আর ওরশের নামেই সেখানে প্রকাশ্যে বসেছে মাদকের আসর। এ যেন এক মাদক সেবনের খোলা কারখানা। তবে ওরশের নামে আয়োজিত মেলায় প্রশাসনের কঠোর নিরাপত্তা থাকলেও মাদকের বিরুদ্ধে প্রশাসন নিরব।
বৃহস্পতিবার(১১ নভেম্বর) বিকাল থেকে শুরু হওয়া ওরশ শেষ হবে ১৪ নভেম্বর। অশ্লীল নৃত্য, মাদকের রমরমা আসর, ধর্মীয় গান ও মজমায় চলছে কালাচাঁদ বাবার ওরশ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সাঁড়াগোপালপুর মাজার শরিফের চারপাশে আলোকসজ্জা দিয়ে সাজানো হয়েছে। সেই মাজার শরিফকে ঘিরে কালাচাঁদ ফকিরের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভক্তরা করছে আরাধনা। ওরশকে ঘিরে মাজার শরিফের মাঠে বসেছে বিভিন্ন দোকান। সেসব দোকানে খই-মুড়ি ও জিলাপিসহ বিক্রি হচ্ছে নানা খাদ্যসামগ্রী। এদিকে মাজার শরিফের পাশেই কিছু ভক্তরা বসেছে মাদকের আসর নিয়ে। সেখানে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক ও মাদক সেবনের যন্ত্রও বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতিদিন বিকেল থেকেই জমতে থাকে এইসব মাদকের দোকান। চলে সারারাত। মাজার শরিফের মাঠপ্রাঙ্গণ যেন নেশার স্বর্গরাজ্য ও নিরাপদ স্থান। দলে দলে আস্তানায় চলছে মাদক সেবন। মেলা প্রাঙ্গণের বাতাসে বইছে গাঁজার গন্ধ। স্থানে স্থানে পাগলের ভক্তরা গাঁজার আসর বসিয়ে সেবন করছেন গাঁজা।
এ মাদক সেবনে যোগ দিচ্ছেন জেলার বিভিন্নস্থান থেকে আসা যুবকরা। তারা মনে করেন কালাচাঁদ বাবার মেলায় এসেছেন আর গাঁজা খাবেন না তা কি করে হয়? সব মিলিয়ে এ যেনো ওরসের নামে মাদকসেবীদের মহামিলন। তবে এসব কিছুই যেন প্রশাসনের দেখেও যেন নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে।
স্থানীয়রা জানান, এখানে ওরশের নামে প্রকাশ্যে মাদক বেচা-কেনা ও মাদক সেবনের আসর বসে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এসব দেখে খারাপ পথে চলে যাচ্ছে। এখানে ওরশের অনুমোদন থাকলেও মাদক বেচা-কেনা কিংবা মাদক সেবনের কোন অনুমোদন নেই। এসব দেখে যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে।
কালাচাঁদ ফকিরের বেশ কয়েকজন ভক্তের সাথে কথা বল্লে তারা জানান, আমাদের গুরু সাধকের মৃত্যুবার্ষীকিতে আমরা প্রতিবছরেই এ মাজার শরীফে এসে মানত করে ওরশ পালন করি। ওরশে মাদক সেবনের নিয়ম আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব কি আর নিয়ম থাকে। তারপরও বাবাকে মনভরে স্মরন করতে আর একটু আনন্দ করতেই মুলত এ আয়োজন।
এ ব্যাপারে ওরশ কমিটির সভাপতি ও ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের কঠোর নিরাপত্তা থাকলেও মাদকের বিরুদ্ধে নেই কোনো ব্যবস্থা।