কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুরের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের হুন্ডি ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত ১ আগস্ট বর্ণিত ইউনিয়নের খাঁনঘোনা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ না করারও হুমকি দেয় ধর্ষক রবিউলের পরিবারসহ ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের এমইউপি সদস্য হেলালসহ প্রভাবশালীরা। এ ঘটনায় এখনো মামলা করতে পারেনি নির্যাতিত পরিবার।
জানা গেছে, ছয় মাস আগে ইসলামপুর ইউনিয়নের মাদ্রাসার শিক্ষার্থী (১৫)-কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে নিয়ে একাধিকবার জোর করে ধর্ষণ করে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড পূর্ব বোয়াল খালী এলাকার সাহাব উদ্দিনের ছেলে মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম। ১ আগস্ট রাতে ছাত্রীর বাড়িতে লোকজন না থাকার সুযোগে রবিউল ছাত্রীর বাড়িতে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে সে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে জোর করে ধর্ষণ করে।
এক পর্যায়ে ডাক-চিৎকার দিলে রবিউল পালিয়ে যায়। পরে পাশের লোকজন এসে কান্নারত অবস্থায় দেখতে পেয়ে জানতে চান। ওই কিশোরী তাদের ঘটনাটি জানায়।
ভিকটিম বলেন, রবিউলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ঘটনার দিন কথা আছে বলে আমার বাড়ীতে আসা মাত্র দরজা বন্ধ করে আমার মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার পর আমি কান্নাকাটি করলে ঘটনাটি কাউকে জানালে আমাকেসহ আমার পরিবারের সবাইকে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয় সে।
পরে এ ঘটনায় থানায় মামলা না করতে ভিকটিম পরিবারের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে অর্থের বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে প্রভাবশালী মহল। রফাদফায় রাতে স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দীনসহ প্রভাবশালীদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সালিশ বৈঠকে পাঁচ লক্ষ টাকা কাবিন, আড়াই লাখ নগদ, আড়াই লাখ বাকীতে ধর্ষকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেয়ার রায় দেয়া হয়। সালিশের দেয়া এ সিদ্ধান্ত ধর্ষণের শিকার পরিবার মেনে নিলেও ধর্ষক রবিউলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ধর্ষণের ঘটনার খবর পেয়ে খাঁনঘোনা এলাকাবাসীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। প্রথম দিকে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীসহ এমইউপি সদস্য হেলাল ধর্ষণের ঘটনাটি ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। তারা আপস মীমাংসারও চেষ্টা চালান। পুলিশও প্রথমদিকে ঘটনাটি গণমাধ্যমের কাছে এড়িয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তারা। পুলিশের দীর্ঘ সময়ক্ষেপণের কারণে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয় বলে স্থানীয়দের দাবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সন্ধ্যার পর ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়নি। মাঝখানে এই লম্বা সময় ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এর সঙ্গে ইসলামাবাদ ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বারসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা জড়িত ছিল বলে দাবি করেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাসিন্দা বলেন, প্রভাবশালীদের সময়ক্ষেপণ ও পুলিশের গড়িমসির কারণে আসামিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানান, সালিশ বৈঠক সম্পর্কে আমি কিছু জানি না, এখন মাথা ঠিক নাই, ঈদগাঁওতে আছি দেখা করিয়েন।
ঈদগাঁও থানার এস আই রুহুল আমিন বলেন,বএ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।