সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লুনি গ্রামের পাকা সড়ক হইতে উত্তর দিকে দক্ষিন প্রতাপপুর গ্রামে যাওয়ার পথে মাত্র ৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের কণ্যা জঙ্গলের খালের ওপর নেই কোনও কালভার্ট।
উক্ত খালে কালভার্টের পরিবর্তে বাঁশের সাঁকোই এখন একমাত্র ভরসা পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের ৯টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষের।কণ্যা জঙ্গলের খালের
ওপর সেতু না থাকায় পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লুনি,দক্ষিণ প্রতাপপুর,হাজীপুর, খাসিয়া পুঞ্জী, মড়ল বস্তি,সাতবাক,লাবু,দোয়ারীখেল ও দোয়রীখেল হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষায় পানি বেড়ে গেলে ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে ওই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর। সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় বাসিন্দা সাংবাদিক আমির উদ্দিন বলেন, এই খালের উত্তর পাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায়
দেড়শ’ শিক্ষার্থী বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানে যাওয়া-আসা করেন। বর্ষাকালে খালের পানি বেড়ে গেলে সাঁকোটি ভেসে যায়। এতে বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়ে প্রায় দুই মাস। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রাহাত আহমদ বলেন, কণ্যা জঙ্গলের খালের ওপর কোনও কালভার্ট না থাকায় বর্ষা এলে প্রায় দুই মাস বিদ্যালয়ে যেতে পারি না। এতে লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটে। ফলে আশানুরূপ পরীক্ষার ফলাফল হয় না।
একই বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র আব্দুর রহিম বলেন, সাঁকোটি পেরিয়ে প্রতিদিন আমাদের বিদ্যালয়ে আসতে হয়। তাই এখানে কালভার্ট নির্মাণ হলে ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার থেকে মুক্তি পাবো। গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুভাস চন্দ্র পাল ছানা
বলেন, দেশ স্বাধীনের দীর্ঘদিন দিন অতিবাহিত হলেও কণ্যা জঙ্গলের খালের ওপর কালভার্ট
নির্মাণ হয়নি। প্রয়োজনের তাগিদে এলাকাবাসী বর্ষা এলে বাঁশ, কাঠ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ করে। তাই আমরা দির্ঘদীন ধরে কণ্যা জঙ্গলের খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি মহোদয়ের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমাদেরর দাবি এখনও পূরণ হয়নি। চলতি বছরে উক্ত খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণ বিষয়ে আশস্ত করেছেন মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি জানান,
স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রতি বছর আমরা এই সাঁকোটি নির্মাণ করে আসছি। তিনি আরো বলেন, এলাকাটি কৃষিনির্ভর হওয়ায় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারে না। এতে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষকরা।
এমনকি বর্ষাকালে কলেজ শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে উপজেলা সদরের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। আবার কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে রোগীকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেওয়া যায় না।স্থানীয়রা জানান, জনপ্রতিনিধিরা তাদের দুর্ভোগ দেখেও দেখে না। ভোট আসলে ওই নদীকে পুঁজি করে ভোট চায়। তখন তারা কালভার্ট তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটে নির্বাচিত হলে এরপর আর দেখা মেলে না। পশ্চিম জাফলং
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম
বলেন, কণ্যা জঙ্গলের খালের ওপর কালভার্ট
না থাকায় দুর্ভোগের সীমা নেই। কালভার্টটি থাকলে কলেজ ও স্কুলের শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা সহজেই চলাচল করতে পারতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘কালভার্ট না থাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বর্ষাকালে। বিষয়টি বিবেচনা করে উক্ত খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ মহোদয়ের বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। চলতি বছরে উক্ত খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণ হবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন।