একশ’ সাত বছরের পুরনো দেশের বৃহৎ রেলসেতু হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ঝুঁকি এড়াতে নতুন রেলসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পরিদর্শন কালে রেলপথ মন্ত্রনালয়ের সচিব সেলিম রেজা বলেন বর্তমান সেতু থেকে এক হাজার ফুট দূরে অনুরূপ নতুন একটি সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি নির্মাণ করতে প্রায় পাঁচ বছর সময় লাগবে। পদ্মা নদীর ওপর উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ রক্ষাকারী নতুন রেলসেতুটির অবস্থান ও দৈর্ঘ্য একই হবে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বাংলাদেশ তথা বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য একটি ইতিহাস। একটি অমর কীর্তি। ব্রিটিশ আমলে এই ব্রিজটি নির্মাণের সূত্র ধরে হাজার হাজার মানুষের রেলওয়েতে চাকরির সুযোগ হয়।
উপনিবেশিক শাসনামলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি কল্পে ১৯১০-১১ সালে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৯১৫ সালের ৪ মার্চ অবিভক্ত ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি উদ্বোধন করেন। তাঁর নামেই ব্রিজটির নামকরণ করা হয় ‘হার্ডিঞ্জ ব্রিজ’। তবে ব্রিজটি দেশের মানুষের কাছে পাকশি ব্রিজ নামেও পরিচিত।
এ সময় এডিজি আই কামরুল ইসলাম,পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম ফিরোজী, পশ্চিমাঞ্চল রেলেওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ কমান্ডেন্ড আসাবুল ইসলাম, পশ্চিমাঞ্চল রেলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহিদুল ইসলাম, রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী/২ আব্দুর রহিম, রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় পরিবহণ কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন, রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা নাসির উদ্দীন, রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী আশিষ কুমার মন্ডল, পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমাডেন্ট মোর্শেদ আলমসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ঐ দিন দুপুর ২টায় শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী পুরোনো রেলওয়ে স্টেশনে সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার পর ঈশ্বরদী জংশন রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শনকালে বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয় সচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন আমরা চাই, ভ্রমণপ্রিয় মানুষের ট্রেন ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ও নিরাপদ হোক। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব সেলিম রেজা বলেন, বিগত সরকারের সময় রেলওয়ের উন্নয়ন ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। আর রেলবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুমন্ত এই রেলকে দৃশ্যমান উন্নয়নে জাগিয়ে তোলা হয়েছে। ঈশ্বরদী এখন আর শুধু বাংলাদেশের না, রূপপুরের কারণে গোটা বিশ্ব আজ ঈশ্বরদীকে চেনে। আমি মনে করি ঈশ্বরদীবাসী তো বেশ সৌভাগ্যবান। আমি রাশিয়া গিয়েছিলাম, সেখানকার যে অ্যাম্বাসেডর রয়েছে, বাংলাদেশের কোনো জায়গা তিনি চেনেন না, কিন্তু তিনি রূপপুর ও ঈশ্বরদীকে চেনেন।
তিনি আরো বলেন, সত্যিই ঈশ্বরদী বিশ্বের মানুষের কাছে এমন একটি পর্যায়ে রয়েছে। এখানে আমার নজর না দেওয়ার কিছু নেই। ব্রিটিশ আমলের সময় যখন রেল সৃষ্টি হয়েছে তখনকার সময়ে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন। শতবর্ষের পুরোনা রেল জংশন ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন এরকমভাবে থাকবে না, অচিরেই ঈশ্বরদী জংশনকে একটি আধুনিক জংশন স্টেশনে রূপান্তরিত করা হবে। আর পাবনা-ঢাকা রেলরুটে অচিরেই আন্তঃনগর ট্রেন চালু হবে। আমরা কাজ করছি।
রেলপথ সচিব আগামীকাল শনিবার সকালে রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র পর্যন্ত নির্মানাধীন রেলপথ পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় করবেন।