পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রতিদিন রাত্রি ১১ টার পরে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে, পেলোডার দিয়ে ১০ চাকার ড্রামট্রাকে করে এ মাটি বিক্রি করা হয় বিভিন্ন জায়গায়। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ট্রাক ড্রাইভারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, মাটির মূল্য গাড়ি প্রতি দুই হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। এবং মাটি বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে জায়গা বুঝে গাড়ির ভাড়া নির্ধারণ করা হয় ৷ এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার গাড়ি মাটি বিক্রি করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় বিশ লক্ষ টাকা।
রাতে ছাড়া দিনে মাটি কাটতে দেখা না যাওয়ায়, ঘটনাস্থলে গত ২১ এপ্রিল ২০২২ তারিখ রাত ১১ টার দিকে, অরনকোলা হারুখালী মাঠে মাটি কাটার সত্যতা যাচাই করতে সাংবাদিকরা উপস্থিত হয়, সেখানে বাইক ও প্রাইভেট কারসহ স্থানীয় প্রভাবশালীদের অনেক লোকজন দেখা যাওয়ায়, ঈশ্বরদী থানার ডিউটি অফিসারকে ফোন দিয়ে নিরাপত্তার কথা বলা হয়। এবং বলা হয় আমরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য রাতে এসেছি এজন্য আমাদের পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন। তখন ডিউটি অফিসার জানান আমি বিষয়টি দেখতেছি। এরপর কিছুক্ষনের মধ্যেই ডিউটি অফিসার মুঠোফোনে ফোন করে জানান, পিয়ারপুরে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে, সে কারণে আমাদের পুলিশ ফোর্স নাই। আপনারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও করেন, কোনো সমস্যা হলে ফোন দিয়েন ফোর্স পাঠিয়ে দিবো।
কিভাবে মাটি কাটছে রাতের আধারে এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় পৌরসভার মাটি কাটার কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান হাসেম কাউন্সিলর এর কাছে। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এখানে কোনো মাটি বিক্রি করা হয়না। মূলত জায়গাটা পরিস্কার করে রাখার জন্য আমরা মাটি গুলো দিয়ে দিচ্ছি, যে কেও এখান থেকে মাটি নিতে পারবে। এমনকি আপনি চাইলেও এখান থেকে ফ্রী মাটি নিয়ে যেতে পারেন। এতে কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না। শুধু এসকেভেটর, পেলোডার, আর ট্রাকভাড়া দিলেই হবে। মাটির কোনো দাম দিতে হবে না।
ঈশ্বরদী পৌরসভার সচিব জহুরুল এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় মাটি গুলো কিভাবে পৌরসভার জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বিক্রি করা হয় । এর কোনো টেন্ডার কিংবা অনুমতি সাপেক্ষে কাগজপত্র আছে কি না। তিনি প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের জানান, এটা একবারে টাকা নিয়ে কাজ করা হচ্ছেনা। এখানে যত ট্রাক মাটি উত্তোলন করা হবে সেই অনুযায়ী টাকার একটা হিসাব নিকাশ আছে।
এ বিষয়ে জানতে, ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইসাহক আলী মালিথার সাথে ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, হারুখালীর মাঠে তো কোন মাটি নেই যা আছে তা হলো রুপপুর পারমাণবিক এ ব্যবহৃত পাথর ও সিমেন্ট। যেগুলো মাটির সাথে মিশে পাথরে পরিণত হয়েছে। তাই জনগণ নিজ খরচে এখান থেকে নিয়ে যাচ্ছে। তবে আমি এগুলো বিক্রি করিনি জায়গা পরিষ্কার করার জন্যই আমি অনুমতি দিয়েছি।