শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদীতে ২ টি গাঁজা’র গাছ সহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ  ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট ১৪ জনের মনোনয়ন দাখিল  ঈশ্বরদী তে এমপির নির্দেশে “পৌর ছাত্রলীগের তীব্র দাবদাহে পিপাসা মেটানোর জন্য শরবত বিতরণ” আমার পক্ষে ভোট চাইলে কারো মাথা নিচু হবে না-আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ঈশ্বরদীতে পৃথক ঘটনায় দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যা বলে প্রচারের অভিযোগ  ঈশ্বরদীতে বাবার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সন্তানদের আহাজারি  ঈশ্বরদীতে মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ স্কুল শিক্ষার্থী  ঈশ্বরদীতে পুকুরে গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু রায়পুর মানব কল্যাণ সংস্থার  ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত 

বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

প্রশান্ত কুমার রায়, লালমনিরহাট প্রতিনিধি / ৩৭৩ বার পঠিত
আপডেট : শুক্রবার, ৫ নভেম্বর, ২০২১, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ণ

‘মৃৎ’ শব্দের অর্থ মৃত্তিকা বা মাটি আর ‘শিল্প’ বলতে এখানে সুন্দর ও সৃষ্টিশীল বস্তুকে বোঝানো হয়েছে। এজন্য মাটি দিয়ে দিয়ে তৈরি সব শিল্পকর্মকেই মৃৎশিল্প বলা যায়।

অতীতে গ্রামের সুনিপুণ কারিগরের হাতে তৈরি মাটির জিনিসের কদর ছিল অনেকাংশ বেশি। পরিবেশ বান্ধব এ শিল্প শোভা পেত গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে। একেকটি শিল্পের বিস্তারের পেছনে রয়েছে দেশ বা জাতির অবদান। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগে আজ তা হারিয়ে যেতে বসেছে।

 

 

সময়ের সাথে সাথে বাজারে প্লাস্টিক সামগ্রীর ভিড়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে রয়েছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের তালুক শাখাতী গ্রামের মৃৎ শিল্পীদের ঘরে ঘরে হাহাকার নেমে এসেছে। ব্যবহার কমে যাওয়ায় বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়াগুলোর দৃশ্যপট। এখন জেলার কুমারপাড়ার বাসিন্দাদের পরিবারে নেমে এসেছে দুর্দিন। কুমারপাড়ার চাকা আজ আর তেমনটি ঘোরে না। মাটির পুতুল, হাঁড়ি-পাতিল, সরা, বাসন, কলসি, বদনার কদর প্রায়ই শূন্যের কোটায়। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক মৃৎশিল্প। এ দেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে এই শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছে। কুমার সম্প্রদায়ের হাঁড়ি-পাতিল ও কলসসহ যেকোন মৃৎশিল্প তৈরির প্রধান উপকরণ হচ্ছে এটেল মাটি, জ্বালানি কাঠ, শুকনো ঘাস ও খড়। একসময় মাটির তৈরি জিনিসের বহুমাত্রিক ব্যবহার ছিল। তখন এ শিল্পের সব মহলেই ছিলো বেশ কদর। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এ শিল্পের মালামাল স্থানীয় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও সরবরাহ করা হতো। সূর্য উঠার সাথে সাথে কুমাররা মাটি দিয়ে তৈরি পাতিলে বোঝাই করা ভার নিয়ে দলে দলে ছুটে চলত প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায়। পাতিল, গামলা, কূপি বাতি, থালা, দূধের পাত্র, ভাঁপাপিঠা তৈরির খাঁজ, গরুর খাবার পাত্র, ধান-চাল রাখার বড় পাত্র, কড়াই, মাটির ব্যাংক, শিশুদের জন্য রকমারি নকশার পুতুল, হরেক রকমের খেলনা ও মাটির তৈরি পশুপাখি নিয়ে বাড়ি থেকে বাড়ি ঘুরে বেড়াতেন। পণ্যের বিনিময়ে ধান সংগ্রহ করে সন্ধ্যায় ধান বোঝাই ভার নিয়ে ফিরে আসত বাড়িতে। ঐ ধান বিক্রি করে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতো জেলার কুমার পাড়ার বাসিন্দারা।

কুমাররা মাটির তৈরি জিনিস হাট-বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু তেমন বেচাকেনা নেই। এখন দিন বদলে গেছে। সবখানেই এখন প্লাস্টিকের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। তাই মাটির তৈরি জিনিসের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই। ফলে মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত কুমার পরিবারগুলো আর্থিক সঙ্কটসহ নানা অভাব অনটনে জড়িত। প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে জেলার কুমার পরিবারগুলোর নেই কোনও আধুনিক মেশিন ও সরঞ্জাম। এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই বাপ-দাদার এ পেশা ছেড়ে জড়িয়ে পড়ছেন অন্য পেশায়। আবার কেউ নির্মম বাস্তবতার সঙ্গে যুদ্ধ করে এখনো কিছু কুমার পরিবার ধরে রেখেছেন বাপ-দাদার এই ব্যবসা।

অভাব অনটনের মধ্যে ও হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার বাপ-দাদার পেশা আঁকরে ধরে আছে। মাটির হাঁড়ি-পাতিল, ঢাকনা হাট-বাজারে আনলেও তেমন জিনিস বিক্রি হয় না। এখন তাদের অনেকেরই অবস্থা শোচনীয়।

হাঁড়ি-পাতিল ও অন্য সব জিনিসপত্র তৈরির জন্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত এটেল মাটি পাশের গ্রাম থেকে টাকা দিয়ে কিনে ভ্যানে করে আনতে হয়। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে মাটির জিনিস তৈরি করে রোদে শুকিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে ব্যবহারযোগ্য করে সেগুলো জেলা-উপজেলার হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!