বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১২:৩০ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদী তে এমপির নির্দেশে “পৌর ছাত্রলীগের তীব্র দাবদাহে পিপাসা মেটানোর জন্য শরবত বিতরণ” আমার পক্ষে ভোট চাইলে কারো মাথা নিচু হবে না-আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ঈশ্বরদীতে পৃথক ঘটনায় দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার আত্মহত্যার ঘটনাকে হত্যা বলে প্রচারের অভিযোগ  ঈশ্বরদীতে বাবার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সন্তানদের আহাজারি  ঈশ্বরদীতে মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ স্কুল শিক্ষার্থী  ঈশ্বরদীতে পুকুরে গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু রায়পুর মানব কল্যাণ সংস্থার  ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত  জীবনের জয়গান মানব কল্যান সংস্থার উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ ক্লাব আইজিয়ান এর উদ্যোগে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত 

ঈশ্বরদীতে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮ শিক্ষক কর্মচারীকে শোকজ করলেন প্রধান শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৬০৬ বার পঠিত
আপডেট : শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০২৩, ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

দুর্নীতি অনিয়মের প্রতিবাদ করায় পাবনার ঈশ্বরদীতে বাঘইল স্কুল এন্ড কলেজের ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীকে একযোগে শোকজের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ( ২২ মার্চ) বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম সাক্ষরিত ঐ সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের শোকজ করে চিঠি পাঠানো হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা। একযোগ সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে শোকজের ঘটনায় তাৎক্ষিক হতভম্ব হয়ে পড়েন শিক্ষকরা । পরে ঐ শোকজ করা চিঠি গ্রহন না করে প্রতিষ্ঠান প্রধান বরাবর ফেরত পাঠান তারা।

জানা গেছে, সাম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে অধ্যায়নরত প্রতিটি শিক্ষার্থীর বেতন মাথাপিছু ২০ টাকা হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। শিক্ষকদের দাবী শিক্ষার্থীদের বেতন বাড়ানো হলে তাদের সম্মানীও বাড়াতে হবে। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবৎ প্রধান শিক্ষকের সাথে অন্যান্য শিক্ষক কর্মচারীদের মতবিরোধ চলে আসছিলো। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সর্বশেষ বৈঠকে সকল শিক্ষক কর্মচারীর সম্মানী ২০০ টাকা হারে বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু গত জানুয়ারি মাস থেকে শিক্ষক কর্মচারীরা তা গ্রহন করেন নি। তাদের অভিযোগ, খাতা কলমে কয়েক মাস আগে থেকে শিক্ষকদের সম্মানী বাড়ানো হয়েছে এমন দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক সে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ব্যাক্তিগত আক্রোশ থেকে প্রধান শিক্ষক এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। মুলত নিজের কুকর্ম ঢাকতে ও শিক্ষক-কর্মচারীদের চাপে রাখতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী কে বাদ রেখে সবাইকে শোকশ করেছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু বেতন বাড়ানো হলেও শিক্ষক কর্মচারীর সম্মানী বাড়ানো হয় নি। অথচ খাতা কলমে শিক্ষকদের সম্মানী বাড়ানো হয়েছে দেখিয়ে তিনি সে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। সাম্প্রতিক সভাপতির নির্দেশে সকল শিক্ষক কর্মচারীর সম্মানী নাম মাত্র দুই’শ টাকা বাড়িয়ে প্রধান শিক্ষক নিজ ক্ষমতায় সম্মানী বাড়ানোর কথা জাহির করছেন। এছাড়াও বিদ্যালয়ে নিয়ম শৃঙ্খলা প্রধান শিক্ষক কখনোই মানেন না। বেশিরভাগ দিনই এসেম্বলি শেষ হওয়ার পর তিনি বিদ্যালয়ে আসেন অথচ অন্য শিক্ষকরা তার প্রাপ্য ছুটি চাইলে তিনি শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। নিজের অনেক কুকর্ম ঢাকতে নিজ কক্ষ বাদ রেখে সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসিয়েছিলেন তিনি। পরে শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে কিছুদিন আগে নিজ কক্ষে ক্যামেরা বসাতে বাধ্য হন তিনি। মুলত এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষক নিজ ক্ষমতা দেখিয়ে সবাইকে শোকজ করেছেন।

সহকারী শিক্ষিকা খাইরুন নাহার জানান, নিজেদের ব্যাক্তিগত প্রাপ্য ছুটি চাইলে ছুটি না দিয়ে বরাবরই প্রধান শিক্ষক দুর্ব্যবহার করেন। গত রবিবার (১৯ মার্চ) ছুটি চাইতে গেলে প্রধান শিক্ষক তাকে লাঞ্চিত করে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, শিক্ষকদের শোকজ করা হয় নি। শুধু চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে কেন তারা নির্ধারিত সসম্মানী টা নেন নি। তবে শিক্ষকরা সে চিঠি গ্রহন না করে বিষয়টিকে এখন শোকজ বলে প্রচার করছেন। পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত ছাড়া নিজ উদ্যোগে শিক্ষকদের এমন লিখিত কারণ দর্শানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চেয়েছিলাম পরিচালনা পরিষদের আগামী বৈঠকের আগে যেন সঠিক কারণ তুলে ধরতে পারি এজন্য সকলকে লিখিত ভাবে কারণ দর্শাতে বলেছি। সভাপতি বা অন্যান্য সদস্যের অবগতি ব্যাতিরেখে নিজ উদ্যোগে লিখিত চিঠি দেওয়া যদি নিয়ম বহির্ভূত হয় তাহলে আমি অপরাধ করেছি।

এদিকে শোকজের ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকালে ভুক্তভোগী শিক্ষক কর্মচারীরা ঈশ্বরদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালায়ে হাজির হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান জানান, ভুক্তভোগী ঐ সকল শিক্ষকদের কাছে শোকজের বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি, যেহেতু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যার প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, তাই তার সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র জানান, মুলত রাজনৈতিক বলির স্বীকার হচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটিতে চাকুরীরত প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান উন্নয়নে নজর না দিয়ে প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকরা দুপক্ষে বিভক্ত হয়ে অন্যদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে এ সমস্যার সৃষ্টি করেছে। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের কমিটি গঠন, নিয়োগ বানিজ্য, বিদ্যালয় ফান্ডের টাকা আত্মসাৎ, নারী কেলেঙ্কারি সহ বিভিন্ন ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার আলোচনার খোরাক বানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম । যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট করছে বলে মনে করেন স্থানীয়রা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!