গতবছর মার্চে করোনার ছোবলে প্রথম বন্ধ ঘোষনা করা হয় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদকাল।
অবশেষে গত ১২ সেপ্টেম্বর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষনা দেয় শিক্ষামন্ত্রনালয়। সারাদেশের মতো ঈশ্বরদীতেও তড়িঘরি করে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়।
তবে সারাদেশের মতো করোনায় ভেস্তে গেছে ঈশ্বরদীর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা ব্যাবস্থা। সরকারী প্রতিষ্ঠানের মতো তরিঘরি করে চালু করতে পারেনি পাঠদান কার্যক্রম।
করোনায় বন্ধ থাকাকালীন সময়ে ঈশ্বরদীর পাকশী গাইডপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেনীকক্ষের তালা ও বেড়া ভেঙ্গে চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ ও অফিসকক্ষের ফ্যান চুরি করার মতো ঘটনাও ঘটেছে। শিক্ষার্থী থাকলেও এবার আর্থিক সংকটে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে না পেরে বন্ধ রাখতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্যমতে, নাইল ইন্টার্নেশনাল কিন্ডারগার্ডেন, আইডিয়াল কিন্ডারগার্টেন, রেইনবো কিন্ডারগার্টেন , শাপলা কিন্টারগার্ডেন, পাকশী, গাইড পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়, আবুল হাশেম বিদ্যানিকেতন, রংধনু কিন্ডারগার্টেন, আমাদের পাটশালা, স্বপ্নকুড়ি কিন্ডারগার্টেনসহ ঈশ্বরদীর বেশ কয়েকটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরু করতে পারেনি তাদের পাঠদান কার্যক্রম।
করোনার এ ছোবল থেকে প্রায় দেড়বছর পর সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রান ফিরলেও বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা চাকরী হারিয়েছেন, হয়েছেন বেকার।
ঈশ্বরদী দুই কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্যমতে, উপজেলায় মোট কিন্ডারগার্টেন রয়েছে ৯৫ টির মতো। যার মধ্যে এখন ১৫ টির মতো খোলা সম্ভব হয়েছে। যেখানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কম। বাকিগুলো বন্ধ- শিক্ষার্থীদের বছরের শেষের এই তিন মাসের জন্য বিদ্যালয়ে পাঠাতে অবিভাবকরা আগ্রহী নন।
ঈশ্বরদী কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি লুৎফর রহমান উপরোক্ত সমস্যা উল্লেখ করে জানান, উপজেলার ৬৫ টি স্কুলের প্রায় ৬’শ শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। যারা এখন সম্পূর্ণ বেকার। প্রায় দেড় বছর তাদের বেকার জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
এদিকে ঈশ্বরদী উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল খালেক জানান, উপজেলা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের বেশিরভাগই স্কুলই বন্ধ রয়েছে। দেড় বছরে প্রতিষ্ঠান গুলোর শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন দিতে না পারা, ছাত্রছাত্রী অন্য স্কুলে ভর্তি হওয়ায়, অবকাঠামোগত সমস্যা ও স্কুলের ভাড়া দিতে না পারায় বন্ধ করতে হয়েছে অনেক প্রতিষ্ঠান।
এসব সমস্যা সমাধান করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ফেরানো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠান মালিকরা।
তবে মাধ্যমিক পর্যায়ে এধরনের কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আকতার। উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রবি জানান, সরকারী স্বাস্থ্যবিধির যে ১৯ টি নীতিমালা দেওয়া হয়ছে সেগুলো মেনে সকল মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে পাঠদান কার্যক্রম চলছে। পাঠদান কার্যক্রম সীমিত আকারে হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়মিত এবং অন্যান্য শ্রেনীর সপ্তাহে একদিন ক্লাস নেওয়ায় শ্রেনীকক্ষের ত্রুটিগত কারনে পাঠদানের ব্যাঘাতের কোনো খবর পাওয়া যায় নি।
