আর মাত্র ২ দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এবারও করোনার মধ্যে পালিত হবে কোরবানির ঈদ। তবে গত বারের চেয়ে সময়টা এ বছর বেশি খারাপ। নানা বিধিনিষেধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। এদিকে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে বার বার দেওয়া হচ্ছে লকডাউন।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু, ছাগল লালন পালন করছেন ঈশ্বরদীর ছোট বড় প্রায় ৬৭৬২ জন খামারী। ঈদে বাজারে পশু তুলতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
করোনার মধ্যে এসব পশু কিভাবে বিক্রি করবেন আর কিভাবে বাজারে তুলবেন তা নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ঈশ্বরদীর এসব খামারিরা। সারা বছর খামারে পরিশ্রম ও বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করার পর এখন পশুর বাজার ও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
তবে করোনার সাথে সাথে ভারতীয় গরু আমদানিতেও নিয়েও কিছুটা দুশ্চিন্তা বেড়েছে তাদের।
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রানী সম্পদ কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য মতে, ঈদকে সামনে রেখে এবার ঈশ্বরদীতে মোট ৪৮৫২০ টি পশু মোটা তাজাকরন করা হয়ছে। এর মধ্যে ১৫৬৬৩ ষাড়, ৩৮৬৭ টি বলদ, ১৫৪৩ টি গাভী, ৮২৫ টি মহিষ, ২২১০৪ টি ছাগল, ৪৩২৮ টি ভেড়া ও ১৯০টি অন্যান্য পশু রয়েছে।
সরজমিনে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় এসব পশুকে লালন পালন করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন খামারীরা। মোটাতাজা করনে, খড়, ভাতের মাড়, খৈল, ভূষি, কাচা ঘাস, খাওয়ানো হচ্ছে। তবে বিক্রি নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তার ছাপ দেখা যায় তাদের মুখে।
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের খামারী রাসেল প্রাং বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে খামারে গরু লালন পালন করে আসছি, এবছরও ৩০-৩৫ টি বিক্রিযোগ্য গরু রয়েছে। তবে করোনার মধ্যে একটু চিন্তায় আছি গরুগুলোকে কিভাবে হাটে নেব। গরুর দাম এখনো স্বাভাবিক আছে শেষ সময় পর্যন্ত এরকম থাকলে কিছুটা লাভবান হতে পারি।
একই ইউনিয়নের আরেক খামারী কামাল প্রাং বলেন, ২০-২৫ টি গরু নিয়ে খুব চিন্তায় রয়েছি। এর মধ্যে যদি ভারতীয় গরু আসে তাহলে বড় অঙ্কের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। আর আমাদের খামার প্রত্যন্ত গ্রামে হওয়ায় অনলাইনে বিক্রির তেমন সুবিধা পায় না, বিক্রি জন্য হাটেই নিতে হয়।
এদিকে খামারীদের সব ধরনের সহযোগীতা করার আশ্বাস দিয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, করোনার জন্য অনলাইনে পশু বিক্রি প্লাটফর্ম আমরা সকল খামারীদের করে দিয়েছি। মাঠে সব সময় আমাদের কর্মকর্তারা এ বিষয়গুলো দেখাশোনা করছেন। ঈশ্বরদীতে মোট কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১৮ হাজার মতো। চাহিদার তুলনায় এবছর ঈশ্বরদীতে ৩০ হাজার পশু বেশি রয়েছে।
এদিকে সরকারী বিধিনিষেধ শিথিল করায় ইতিমধ্যে ঈশ্বরদীর অরন কোলা, আওতাপাড়া, নতুন হাট সহ অন্যান্য পশুর হাটগুলোতে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। বাইরে থেকে আসতে শুরু করেছে পাইকারী পশু ব্যবসায়ীরা।
তবে ঈশ্বরদীর খামারীদের প্রত্যাশা ভারত থেকে পশু আমদানি বন্ধ না থাকলে ঈদে লোকসান গুনতে হবে তাদের। এখন ব্যাবস্থা নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। করোনা কাটিয়ে পশুগুলো ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারলেই কিছুটা স্বস্তি মিলবে প্রান্তিক এ খামারীদের।