কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের টাইম বাজার নামক এলাকায় বিয়ের গাড়ীতে হামলা করে গাড়ী ভাংচুর, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করার ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় পুরো টাইম বাজার এলাকা জুড়ে আতংক ছড়িয়ে পড়ে, বাজারে আগত মানুষজন দিক-বেদিক ছোটাছুটি শুরু করে এক পর্যায়ে প্রায় দুই ঘণ্টা বাজারের দোকানপাট বন্ধ ছিল। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজন ও বিভিন্ন দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) সদরের খুরুশকুল গাজীর ডেইল এলাকার দুবাই প্রবাসী আমান উল্লাহর বিয়ের দিন ধার্য ছিল। ওই দিন বিকালে গাজীর ডেইল এলাকার বিভিন্ন লোকজন বরযাত্রীর গাড়ী নিয়ে কক্সবাজার পৌরসভার নুনিয়ারছড়া এলাকায় যায়। পরে সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে সাতটার দিকে বর যাত্রীর গাড়ী নববধুকে নিয়ে খুরুশকুল গাজীর ডেইল এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা করে। বর যাত্রীর গাড়ী খুরুশকুল টাইম বাজার এলাকায় পৌছালে খুরুশকুলের চিহ্নিত সন্ত্রাসী মঞ্জু বাহিনীর প্রধান মঞ্জুর আলম ও একই এলাকার কালুর ছেলে জয়নালের নেতৃত্বে আনর আলীর ছেলে নুরুল আলম, বদি আলম, আনু মাঝির ছেলে ইমরান ও ফোরকান, বেলাইক্কার ছেলে মিজান, মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আলম, মৃত ফরিদের ছেলে জনি, মীর কাসেমসহ আরো ১০-১৫ জন সন্ত্রাসী গাজীর ডেইল এলাকার সভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হাফেজ শাহ আলমের গাড়ীটি টার্গেট করে হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা গাড়ীর দরজা খুলতে না পেরে রাম দা দিয়ে বারি মেরে গাড়ীর গ্লাস ভাংচুর করে। তখন সন্ত্রাসীরা গাড়ীতে থাকা মহিলাদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে।এমন সময় সন্ত্রাসীরা গাড়ীতে থাকা গাজীর ডেইল এলাকার সমাজপতি হাফেজ শাহ আলমকে ঘটনার বিষয়ে মামলা করলে প্রাণে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়।
এর আগে সন্ধ্যায় মঞ্জু বাহিনীর সদস্যরা গাজীর ডেইল এলাকার কাদের হোছন মেম্বারের ছেলে আতা উল্লাহকেও বাজারে মারধর করে বলে জানা যায়।
খুরুশকুল টাইম বাজারের বিভিন্ন দোকানদার ও স্থানীয় লোকজন আরো জানান গত ২৯ আগষ্ট সকাল আনুমানিক সাড়ে এগারোটার দিকে গাজীর ডেইল এলাকার মুদি ব্যবসায়ী মো. আইয়ূব খান তার মুদি দোকানের জন্য মালামাল কিনতে স্থানীয় টাইম বাজারে আসলে মঞ্জুর ছেলে খুরুশকুলের কিশোর গ্যাং লিডার মো. জয়া এর নেতৃত্বে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায় চিহ্নিত কিশোর গ্যাং গ্রুপ। কিশোর গ্যাং সদস্যরা ব্যবসায়ী মো. আইয়ূব খানকে হত্যার উদ্দেশ্যে উপর্যপুরি আঘাত করে এবং তার সাথে থাকা নগদ টাকাও লুট করে। তখন স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে কিশোর গ্যাং সদস্যরা দ্রুত পালিয়ে যায়। মো. আইয়ুব বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছে। এ বিষয়ে আইয়ুবের ভাই নেজাম বাদী হয়ে মামলা করেন সদর মডেল থানায়। সেই মামলার কোনো আসামীকে এখনো পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ। ঐ মামলার জেরে টাইম বাজারের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ বর যাত্রীর গাড়ীতে হামলা করে গাড়ী ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করছে স্থানীয়রা।
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ আসলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি। বর যাত্রীদের গাড়ীতে হামলা ও লুটের ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা যায়।
বিষয়টি জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসি।