সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পল্লীতে জনসাধারণ চলাচলের একমাত্র রাস্তার মাটি কেটে ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত এক লন্ডন প্রবাসীর বিরুদ্ধে এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
এদিকে গ্রামের ভুক্তভোগী জনসাধারণ জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লন্ডন প্রবাসী ফখর উদ্দিনকে প্রধান করে ২৭ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ জানা যায়, উপজেলার ২নং পাটলী ইউনিয়নের লাউতলা (নুরবালা) পশ্চিম গাংপাড় এলাকার রাস্তাটি ওই এলাকার একমাত্র রাস্তা হিসেবে পরিচিত। লাউতলা পশ্চিম গাংপাড় এলাকায় শতাধিক বাড়ী-ঘর বিদ্যমান রয়েছে। ২০০৬ সালে প্রথমে উক্ত রাস্তায় সরকারি বরাদ্ধে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ২০১৮ ও ২০২১ সালে সরকারি বরাদ্ধে মাটি ভরাটের কাজ সমাপ্ত হয়।
রাস্তাটি বর্তমানে এলজি ইডি ইনভেন্টরিতে পাকা করণের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
২০২১ সালের ১৫ জুন রাতের আঁধারে গ্রামের খালিছ মিয়ার বাড়ীর পাশে কে বা কাহারা রাস্তার মাটি কেটে জমিতে ফেলে দেয়। পরদিন গ্রামবাসী রাস্তা পূনরায় ভরাট করেন। এভাবে রাতের আঁধারে পরপর ৩ বার মাটি কেটে ফেলার ঘটনায় গ্রামবাসী অবাক হন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, একই গ্রামের মৃত ছমরু মিয়ার ছেলে ইংল্যান্ড প্রবাসী ফখর উদ্দিনের নির্দেশে গত ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে জুনেল মিয়া ও দিলু মিয়া, পাশ্ববর্তী ছাতক থানার কাংলাজান গ্রামের মৃত রইছ উল্লার ছেলে মধু মিয়া, শিব্বির আহমদ, তফজ্জুল সহ উশৃংখল প্রকৃতির ৪৫-৫০ জনের একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রকাশ্যে রাস্তার মাটি কেটে জমিতে ফেলে দিচ্ছে। এ ঘটনা দেখে পাশ্ববর্তী বাড়ীর বাসিন্দা খালিছ মিয়া, রফু মিয়া, শাহিনুর, আবদাল মিয়া, কালাশাহ ও রফিনা বেগম সহ উপস্থিত অনেকেই এ ঘটনার প্রতিবাদ করে এর কারণ জানতে চাইলে তাদের বাঁধা উপেক্ষা করে ভাড়াটে লোকজন হুমকি দিয়ে বলেন, লন্ডন প্রবাসী ফখর উদ্দিনের নির্দেশে কাজ করছি। যেকোন মূল্যে আমরা রাস্তা জমিতে মিশিয়ে দেব।
এ খবর গ্রামে মূহুর্তে ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী জড়ো হলে দূস্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। মাটি কেটে জমিতে ফেলে দেয়ায় সরকারের প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অনেকেই জানান।
সরেজমিনে দেখা যায়, উক্ত রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন এলাকার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, রাস্তার সন্নিকটে মসজিদের মুসল্লি ও মসজিদে আরবি পড়তে আসা শিশুরা সহ এলাকার শত শত মানুষ এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে। রাস্তা কাটার কারণে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী দূর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে এলাকার অসুস্থ রোগীদের উপজেলা সদরে নিয়ে আসতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
এদিকে লন্ডন প্রবাসী ফখর উদ্দিনের এ ধরনের অমানবিক কার্যক্রমের জন্য এলাকায় ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
গ্রামের শাহিনুর, খালিছ মিয়া, আবদাল মিয়াসহ অনেকেই বলেন লন্ডন প্রবাসী ফখর উদ্দিন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার কায়েম করতে আমাদেরকে হয়রানির উদ্দেশ্যে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। উক্ত রাস্তার মাটি কাটায় গ্রামবাসী ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। তার লালিত সন্ত্রাসীদের হুমকিজনিত কারণে বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। এ বিষয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা নিতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাজেদুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসীর দেয়া অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল হক বলেন, এই রাস্তায় বার বার সরকারি বরাদ্ধে মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে। যারা রাস্তার মাটি কেটে জনসাধারণের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন এটা খুবই অন্যায়। রাস্তাটি এলাকার একমাত্র চলাচলের মাধ্যম এটা সত্য।