পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিবছরের মতো এবছরও লিচুর ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষীরা। সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, চট্টগ্রাম, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঈশ্বরদীতে মধু সংগ্রহ করতে এসেছেন মৌচাষীরা। তারা লিচু বাগানে অস্থায়ী মৌবক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন।
ইতোমধ্যে উপজেলায় অর্ধশতাধিক স্থানে প্রায় ১০ হাজার মৌবক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। মৌচাষীরা অস্থায়ী বাসস্থান স্থাপন করে মধু সংগ্রহের জন্য আবাসস্থল গড়ে তুলেছেন। লিচুর পূর্ণ মুকুল ফুটে গুটি হতে সাধারনত ১০-১২ দিন সময় লাগে। তবে ঈশ্বরদীতে দেশী ও বিদেশী দুই জাতের লিচুর মিশ্র চাষের কারনে মধু সংগ্রহের সময়টা ১২-১৫ দিন স্থায়ী হয়। লিচুর মধু সংগ্রহ করার জন্য মৌচাষীরা সাধারনত ২ সপ্তাহ লিচু বাগানে অবস্থান করেন। এ সময়টাতে তারা সপ্তাহে ২ বার মধু সংগ্রহ করে থাকেন।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবছর মধু সংগ্রহে কিছুটা বিপাকে পড়েছেন এসব খামারীরা। যার ফলশ্রুতিতে মধু সংগ্রহের লক্ষমাত্রা পূরণ না হবার আশঙ্কা করছেন মৌচাষীরা।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মৌচাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চলতি বছর লিচুর মুকুল ফোটার উপযুক্ত সময়ে (২ সপ্তাহের মধ্যে) তিন দিন বৃষ্টি হয়েছে। আর বৃষ্টির পানি জমে থাকায় লিচুর মুকুলে মধু জমতে পারে নি। এতে করে ঐ দুই সপ্তাহে ৪-৫ দিনের পরিবর্তে ২-৩দিন মধু সংগ্রহ করতে পেরেছেন চাষীরা। ফলে আশানুরূপ মধু না পাওয়ায় কিছুটা হতাশ মৌচাষীরা।
চাষীরা জানান, বৃষ্টির সাথে শিলা ও ঝড়ো বাতাস থাকার কারনে বেশিরভাগ গাছের ফুটন্ত মুকুল ঝড়ে গেছে। যার ফলে কাঙ্খিত মাত্রায় মধু সংগ্রহ সম্ভব হয় নি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু খামারী লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ মিতা সরকার বলেন, মধু সংগ্রহের জন্য লিচুর ফুলে যত মৌমাছি বসবে ফুলে তত পরায়গমন হয় এবং লিচুর ফলনও বৃদ্ধি পায়। চলতি বছরে উপজেলায় লিচু ফুলের মধু উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২২.৫ মেট্রিক টন, যা গতবছর ছিলো ১৬ মেট্রিক টন। তবে বৈরী আবহাওয়ায় মধু উৎপাদনের লক্ষমাত্রা কিছুটা ব্যহত হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।