শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদীতে বাবার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সন্তানদের আহাজারি  ঈশ্বরদীতে মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ স্কুল শিক্ষার্থী  ঈশ্বরদীতে পুকুরে গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু রায়পুর মানব কল্যাণ সংস্থার  ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত  জীবনের জয়গান মানব কল্যান সংস্থার উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ ক্লাব আইজিয়ান এর উদ্যোগে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত  আওয়ামীলীগ হত্যায় উৎসাহী দল– ঈশ্বরদীতে রুহুল কবির রিজভী  ঈদ উপলক্ষে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের বিশেষ মহড়া  ঈশ্বরদীতে শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান মরিয়ম বেগম

ভালোবাসা ও সম্মানই রক্তের বিকল্প, অন্য কিছু নয়

জাগ্রত সকাল ডেস্ক / ৫০২ বার পঠিত
আপডেট : রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ
ছবি: তানিম খন্দকার

বর্তমান সময়ে অধিক সংগঠন এর একঝাঁক মানবতার ফেরিওয়ালা সেচ্ছাসেবীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে রক্তদাতা পাওয়া রোগীর স্বজনদের কাছে সহজতর হলেও তাদের কিছু কিছু ব্যাবহারের ফলে সেচ্ছায় রক্তাদাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক অসহায় মুমূর্ষু  রোগী। যা আমাদের আশানুরূপ সাফল্য থেকে দুরত্বের অভিপ্রায়।

একটা সময় ছিলো যখন মানুষের রক্তের প্রয়োজন হলে পাগলের মতো খুজতে হতো। কিন্তু সহজে রক্তদাতা পাওয়া যেতো না। আর অনেক চেষ্টার পর রক্তদাতা পাওয়া গেলেও টাকা দিয়ে কিনতে হতো সেই রক্ত। কিন্তু বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রসার এবং রক্তদানের ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন এর সাহায্যে রক্তদাতা খুজে পাই ঠিকই কিন্তু সেই রক্তদাতার প্রাপ্য সম্মান থেকে তাদের বঞ্চিত করি। আপনার প্রয়োজনে আপনি তাকে প্রিয়জন বানিয়ে তার থেকে তার অমূল্য রক্ত নিবেন, আর প্রয়োজন শেষে তার কোন খোঁজ নিবেন না এমন অমানবিক আচরণ কেন????

বর্তমান সময়ে সেচ্ছায় রক্তদাতাদের সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রোগীর স্বজনের তার প্রতি এমন অমানবিক আচরণ। যার অনেক রক্তদাতা পরবর্তীতে রক্ত দিতে চাই না।

একজন সেচ্ছায় নিয়মিত রক্তদাতা আপনার থেকে টাকা চাই না, চাই একটু দোয়া, ভালোবাসা আর সম্মান। এর থেকে বেশি কিছু তার পাওয়া উচিত কারণ একবার ভেবে দেখুন । এখন পর্যন্ত কোন বিজ্ঞানী রক্ত তৈরী করতে পারে নাই। রক্তের মতো অমূল্য সম্পদ আর কি হতে পারে….আর একজন সেচ্ছায় রক্তদাতা তার সেই অমূল্য সম্পদ আপনাকে বিনামূল্যে দান করে। তাহলে বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন তার সম্মান কতটুকু হওয়া উচিত…??

আবার কিছু কিছু তরুণ-তরুণী আছে যারা প্রাপ্তবয়স্ক এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েও রক্ত দিতে ভয় পাই। তারা কিছু ভুল ধারণা নিয়ে রক্তদানের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করে না। রক্তদানের ফলে আমাদের তো কোন প্রকার ক্ষতি হয় না তাহলে কেন এতো অবজ্ঞা, অবহেলা, ভ্রান্ত ধারণা রক্তদান নিয়ে????? কিসের এতো ভয় রক্তদানের মতো মহৎ কাজে?????

যেখানে রক্ত দিলে কোন ক্ষতি হয় না বরং আরো উপকার পাওয়া যাই। যদিও রক্তদানের ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছিলো ভয়ের মাধ্যমে। রক্তদানের ইতিহাস খুজলে দেখা যাবে তিনটি দশ বছরের শিশু বাচ্চার প্রাণ হারাতে হয়েছিলো ১ম রক্তদানের জন্য।

১৪৯২ সালে অষ্টম পোপ যখন স্ট্রোক করেন তখনকার চিকিৎসকরা ধারণা করেছিলেন, পোপের মনে হয় শরীরের কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এই ভেবে পোপকে বাঁচানোর জন্য ১০ বছর বয়সের তিনজন ছেলের শরীর থেকে রক্ত বের করে পোপকে পান করানো হয়েছিল। কিন্তু আমরা বর্তমান সময়ের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে বাস করি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা রক্তদানের সঠিক নিয়ম ও সরঞ্জামের ব্যবহার করে কোন রকম ভয় ছাড়াই ১২০ দিন পর পর আমাদের শরীরের অতিরিক্ত রক্ত একজন মূমর্ষ রোগীকে দান করতে পারি। রক্তের অভাবের কারণে প্রতিবছর বহু রোগীর প্রাণ সংকটের মুখ পড়ে।

এক ব্যাগ রক্ত দিতে সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিট। এই অল্প সময়ে চাইলেই একজনের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের শরীরে ৪ থেকে ৬ লিটার পরিমাণ রক্ত থাকে। প্রতিবার ৪৫০ মিলিলিটার রক্ত দেয়া হয়। এ কারণে রক্ত দিলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই নেই।

অনেকেই রক্ত দান করা নিয়ে অহেতুক ভয় পান। রক্ত দিলে মনে করেন যে তার শরীরে হয়ত কোন সমস্যা হবে। কিন্তু এটি যে একদমই ভুল ভাবনা। রক্ত দানের পরেও আপনি সম্পূর্ন সুস্থ থাকবেন কারণ রক্তদানের পরেও ৫০ কেজি ওজনের একজন পুরুষ রক্তদাতার শরীরে থাকবে অতিরিক্ত ৯০০ মিলি রক্ত এবং একজন মহিলা রক্তদাতার শরীলে থাকবে ৪০০ মিলি রক্ত।

এজন্য এই বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন রক্তদানের পর আপনি রক্তশূন্যতায় মরে যাবেন না কারন রক্তদানের পরেও প্রয়োজনীয় রক্তের থেকেও ‘অনেক’ বেশি পরিমান রক্ত আপনার শরীরে থাকছে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময় পরপর রক্তদান করলে তার কোন ক্ষতি হয় না।
আসুন আমরা নিয়মিত সেচ্ছায় রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করি।

আসুন শপথ করি। আমার রক্ত আমি দিবো, মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে সাহায্য করবো।

 

লেখক
তানিম খন্দকার
সংগঠক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!