ভালোবাসা একটি মানবিক অনুভূতি এবং আবেগকেন্দ্রিক একটি অভিজ্ঞতা। বিশেষ কোন মানুষের জন্য স্নেহের শক্তিশালী বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ভালোবাসা। যুগে যুগে ভালোবাসার জন্য অনেকেই অনেক কীর্তি রেখে গেছেন। আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস (ভ্যালেন্টাইন ডে)। প্রথম দিকে এটি সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন নামক একজন অথবা দুজন খ্রিষ্টান শহিদকে সম্মান জানাতে খ্রিষ্টধর্মীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছিল, পরবর্তীতে লোক ঐতিহ্যের ছোঁয়ার মধ্যে দিয়ে এটি বিভিন্ন দেশে আস্তে আস্তে প্রেম ও ভালোবাসার সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও বাণিজ্যিক একটি আনুষ্ঠানিক দিবসে পরিণত হয়।
এই দিনটাকে স্মরনীয় করে রাখতে প্রেমিক-প্রেমিকা বা নব-দম্পতিরা একটু ভিন্নভাবে পালনের চেষ্টা করে। এরকমই এক নবদম্পতি বাংলাদেশী নাগরিক আসাদুজ্জামান রিজু ও আমেরিকান তরুনী হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন তাদের প্রথম ভালবাসা দিবস একসঙ্গে উদযাপন করতে যাচ্ছে।
গত অক্টোবরে প্রেমের টানে বাংলাদেশে এসে পাবনার ঈশ্বরদীর বাসিন্দা আসাদুজ্জামান রিজুর (২৭) সঙ্গে ঘর বাঁধেন আমেরিকান তরুণী হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন (২০)। তিনি আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশের জর্জটাউন শহরের বাসিন্দা। আসাদুজ্জামান রিজু ঈশ্বরদী শহরের পিয়ারাখালী গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি কম্পিউটার সফটওয়্যার অ্যান্ড হার্ডওয়্যার কাজের পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেন।
প্রেমিক আসাদুজ্জামান রিজু বলেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ফেসবুকে তাদের পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে দুজন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন ডেভিডসন।পরে পারিবারিকভাবে ঢাকায় বিয়ে করেন তারা। ইসলাম ধর্মের রীতি মেনে আসাদুজ্জামান রিজুর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বিয়ের আগেই ডেভিডসন খ্রিষ্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা উভয়ে ভালোবেসে বিয়ে করে সুখের সঙ্গে বসবাস করছি। আমরা সারাজীবন একসঙ্গে থাকতে চাই। গত বছরের আমরা দুজন দুই দেশে থেকে প্রেমিক প্রেমিকা হিসেবে ভালোবাসা দিবস উদযাপন করেছি। তবে প্রথমবারের মতো এবার স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসঙ্গে আমরা দিনটি উদযাপন করবো। এটা একটা দারুণ অনুভূতি। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা ব্যতিক্রম কিছু করার চেষ্টা করবো।
রিজু আরও জানান, বিয়ে পরবর্তী সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার কারণে পদে পদে নানা রকম হয়রানির শিকার হয়েছেন তারা। সাম্প্রতি হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসনের ভিসার মেয়াদ বর্ধিত করতে গিয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে নানারকম হয়রানী শিকার হতে হয় তাদের। এমনকি বিমানবন্দর সংলগ্ন একটি হোটেলের রাত্রী যাপন করতে গিয়েও তাদের হয়রানি শিকার হতে হয়।
এসব হয়রানীর শিকার হওয়ায় এদেশের প্রতি নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে হারলি ডেভিডসনের। এজন্য ঈশ্বরদীর বাহিরে যেতে এখন আর আগ্রহ দেখায় না সে। তবে সব সমস্যাকে মোকাবেলা করে রেখে আগামীতে তাদের আমেরিকা যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। ভিসা জটিলতার এসব সমস্যার সমাধানে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।