সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ

রাসেল ভাইপার আতঙ্কে ঈশ্বরদীবাসী

সাইদুর রহমান অনিক,বিশেষ প্রতিনিধি / ৪৪০ বার পঠিত
আপডেট : রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৪:০৭ অপরাহ্ণ

পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলাতে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপের আতঙ্কে রয়েছে ঈশ্বরদীবাসী, পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাস করা মানুষ সহ পাকশী বাঘইল এলাকাতে বেশি দেখা যাচ্ছে। একের পর এক বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপের দেখা মিলছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।

উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের অন্তগত গ্রামে রাসেল ভাইপারের কামড়ে এক শিশু বাচ্চার মৃত্যু হয়।
৮ ডিসেম্বর পাবনা নাজিরপুর সংলগ্ন টিকরী গ্রামের ছেলে রাসেল ভাইপার সাপের কামরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল হসপিটালে ইন্তেকাল করেছেন। বর্তমানে পাবনা জেলায় রাসেল ভাইপারের আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঈশ্বরদীতে বর্তমান আতঙ্কের আরেক নাম রাসেল ভাইপার, যা দিন দিন ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরএমও (RMo) ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাসেল ভাইপার ইন্ডিয়া থেকে নদী পথে ঈশ্বরদী আসছে, এটা খুবই ভয়ঙ্কর বিশাক্ত সাপ, তাই কৃষকদের পায়ে বুট এবং সাবধানে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ঈশ্বরদী হাসপাতালে ১ জনকে দেওয়ার মতো ভ্যাকসিন রয়েছে।
বাজারে একটি ভ্যকসিনের বাজার দর প্রায় ১২-১৩ হাজার টাকা।

এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এক ব্যক্তি পদ্মার চর থেকে রাসেল ভাইপারকে অজগর সাপ ভেবে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর রাসেল ভাইপারের কামড়ে তিনি মারা যান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত ২-৩ বছর ধরে ঈশ্বরদীতে বিরল প্রজাতির এই মারাত্মক বিষধর রাসেল ভাইপারের বিস্তার ঘটেছে। এ সাপের কামড়ে কয়েকজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

উল্লেখ্য, মারাত্মক বিষধর প্রজাতির এ রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ নিচু জমির ঘাসযুক্ত উন্মুক্ত পরিবেশে এবং কিছুটা শুষ্ক পরিবেশে বাস করে। এরা নিশাচর, এরা খাদ্য হিসেবে ইঁদুর, ছোট পাখি, টিকটিকি ও ব্যাঙ ভক্ষণ করে। অন্যান্য সাপ সাধারণত ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। তবে রাসেল ভাইপার সাপ ডিম পাড়ার পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এরা বছরের যে কোনো সময় প্রজনন করে। একটি স্ত্রী সাপ গর্ভধারণ শেষে ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো রাসেল ভাইপার সাপের ৭৫টি পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড আছে। এরা প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক হয়ে থাকে।

পৃথিবীতে প্রতিবছর যত মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়, তার উল্লেখযোগ্য একটি অংশ এই রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা যায়। অন্যান্য সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করলেও এ সাপটির স্বভাব ঠিক তার উল্টো। আক্রমণের ক্ষিপ্র গতি ও বিষের তীব্রতার কারণে ‘কিলিংমেশিন’ হিসেবে বদনাম রয়েছে সাপটির। এদের বিষদাঁত বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃহৎ।

এরা প্রচণ্ড জোরে হিস হিস শব্দ করতে পারে। রাসেল ভাইপারের বিষ হোমটক্সিন, যার কারণে কামড় দিলে মানুষের মাংস পচে যায়। তীব্রতার দিক দিয়ে সাপটি বিশ্বের ৫ নম্বর ভয়ংকর বিষধর সাপ। কিন্তু মাত্র ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে কাউকে কামড়ে বিষ ঢালতে পারে সাপটি! কামড়ের ক্ষিপ্রগতির দিক দিয়ে সব সাপকে হারিয়ে রাসেল ভাইপার প্রথম স্থান দখল করেছে। অন্যান্য সাপ শিকারের সময় শিকারকে কামড় দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়ে ফেলে কিন্তু হিংস্র রাসেল ভাইপার শিকারকে শুধু একা নয়, তার পুরো পরিবারসহ খেতে ভালোবাসে। রাসেল ভাইপার সাপ পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দুর্লভ প্রজাতির একটি সাপ। এটি পশ্চিমবঙ্গের বেশির ভাগ জেলার গ্রাম অঞ্চলে ভয়ের অন্যতম কারণ। আগে শুধু বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে এ সাপ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এরা ঈশ্বরদী সহ পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা ও চরগুলোতেও বিস্তার লাভ করেছে। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ বলে মনে করা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!