শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০১ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
ঈশ্বরদীতে বাবার হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সন্তানদের আহাজারি  ঈশ্বরদীতে মাটির পুতুল পোড়াতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ স্কুল শিক্ষার্থী  ঈশ্বরদীতে পুকুরে গোসলে নেমে শিক্ষার্থীর মৃত্যু রায়পুর মানব কল্যাণ সংস্থার  ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত  জীবনের জয়গান মানব কল্যান সংস্থার উদ্যোগে ঈদ উপহার বিতরণ ক্লাব আইজিয়ান এর উদ্যোগে ইফতার মহফিল অনুষ্ঠিত  আওয়ামীলীগ হত্যায় উৎসাহী দল– ঈশ্বরদীতে রুহুল কবির রিজভী  ঈদ উপলক্ষে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের বিশেষ মহড়া  ঈশ্বরদীতে শিক্ষার্থীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়তে চান মরিয়ম বেগম

শীতের শুরুতেই ঈশ্বরদীতে খেজুর রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরীতে ব্যস্ত গাছিরা

শিশির মাহমুদ / ১৯০ বার পঠিত
আপডেট : রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২, ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে খেজুর রস সংগ্রহ ও রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। শীতের শুরু থেকেই বাড়ছে রসের চাহিদা। পাশাপাশি রস জ্বালিয়ে তৈরি করা গুড়ের চাহিদাও অনেক। শীত মৌসুমে আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুর রস দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের পিঠা ও পায়েস। পাশাপাশি খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানান পিঠাপুলি। তাই বাণিজ্যিকভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে এ অঞ্চলের গাছিদের।

উপজেলার বাইরের গাছিরাও এসে ঈশ্বরদীতে রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করছে। সুস্বাদু এই খেজুরের রস আগুনে জ্বালিয়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে এসব গাছিদের এখন দম ফেলার সময় নেই। খেজুর রস ও গুড় বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এখানকার গাছিরা।

গাছিরা জানায়, প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যেই খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় মাটির কলস বেঁধে রাখা হয় রসের জন্য।

ছবি: গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহ করছেন গাছিরা।

শীতের সকালে সূর্য মিটমিট করে আলো ছড়ানোর আগেই ওইসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়। সকালের দিকে কেউবা রস বিক্রি করতে নিয়ে যায়। আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বিক্রি করে থাকেন তারা। খেজুরের রস আহরণ শেষে হাঁড়িতে সংগৃহীত রস নিয়ে বড় চুলার কাছে ছুটে আসেন গাছীরা। এরপর টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে এসব রস শুকিয়ে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার ব্যাবধানে জ্বালানোর ফলে তৈরি হয় লাল গুড়।

তবে ভেজালের ভিড়ে আসল খেজুরের গুড় পাওয়ায় যেন দায় হয়ে পড়েছে। এতোকিছুর ভিড়ের খাঁটি গুড়ের সন্ধান মেলে কেবল সেসব গাছীদের কাছ থেকে খেজুর গুড় সংগ্রহ করার ফলে।

জানা গেছে, উপজেলার লক্ষীকুন্ডা, সাহাপুর, সাঁড়া ও মুলাডুলি ইউনিয়নে খেজুর গাছের সংখ্য বেশি। এসব খেজুর গাছ থেকে রস আহরণ ও গুড় তৈরি করে লাভবান হচ্ছেন গাছিরা। আবার বাড়তি লাভের আশায় এসব এলাকায় আসছেন পাশ্ববর্তী লালপুর উপজেলার গাছিরাও। খেজুর গুড় তৈরির পেশায় এখন বাড়তি আয়ে খুশি তারা।

বাহির থেকে আগত গাছিরা স্থানীয় গাছের মালিকদের থেকে ৩০০ টাকা দরে প্রতিটি খেজুর গাছ শীত মৌসুমের জন্য লিজ নিয়েছেন । এসব গাছ থেকে তারা প্রতিদিন রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করেন। কোনো কোনো গাছি , ‘দুই যুগের বেশি সময় ধরে এভাবে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও এসব রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরির কাজে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।

ছবি: রস জ্বাল ও পাটালি তৈরী।

স্থানীয় গাছি জামিল হোসেন বলেন, শীত মৌসুমের শুরু থেকেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। শীতের প্রায় চার মাস রস সংগ্রহ করা যায়। এই রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে আমরা সংসার চালাই।

পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালপুর থেকে আসা রহমত আলী নামে এক গাছি জানান, এবার শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে, তাই দামটাও তুলনামূলক বেশি।।

আশরাফুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক গুড় ক্রেতা জানান, খাঁটি গুড় পাওয়ার আশায় এখানে আসলাম। রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে কিনে নিলাম। আসলে বর্তমানে ভেজালের কারনে খাঁটি জিনিসের প্রাপ্যতা একটু মুশকিল হয়ে গেছে। তাই এখানে এসে গুড় কিনতে পেরে ভালো লাগছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, শীতকালে বাংলাদেশের সর্বত্রই খেজুর রস পাওয়া যায়। রাস্তা, বাঁধ, পুকুর পাড়, খেতের আইল এবং আবাদি জমিতে এ বৃক্ষ বেশ ভালো জন্মে। খেজুর পরিবেশবান্ধব, স্থানসাশ্রয়ী একটি বৃক্ষ। খেজুর রস ও গুড় বিক্রি করে খামারির আর্থিক লাভ ও স্বাবলম্বী হওয়ার দৃষ্টান্ত বেশ সুপ্রাচীন। গ্রামীণ অর্থনীতি এবং মৌসুমি কর্মসংস্থানে খেজুর গাছের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। তবে অধিক মুনাফার আশায় ভেজাল গুড় তৈরী থেকে সাবধান থাকা জরুরী।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!