সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরে বাটোয়ারা ছাড়াই পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রি, বসতঘর ভাংচুর ও রাস্তায় দেয়াল নির্মাণ করায় অবশেষে এক যুক্তরাজ্য প্রবাসী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। এরই প্রক্রিতে বিজ্ঞ আদালত বিবাদীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। জারিতে উক্ত বাড়ী রকম ভূমিতে বিবাদীগণ কোন প্রকার সংস্কার কাজ বা ক্রয়-বিক্রয় না করতে নির্দেশ প্রদান করে নোটিশ প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে বিবাদীদের জবাব দাখিলের আদেশ দেয় আদালত।
এলাকাবাসী ও মামলা সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের হাবিবনগর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী উলফত উল্লাহ’র জীবদ্দশায় তিনি ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে রেখে মারা যান। সবাই বৃটিশ সিটিজেন হলেও মৃত্যুর আগে ও পরে পরিবারের হাল ধরেন বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন। পিতার মৃত্যুর কয়েক বছরের মাথায় পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী দেলোয়ার হোসেন, মকবুল হোসেন ও দিলদার হোসেনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এ নিয়ে সালিশ বৈঠকও বসে কিন্তু বিষয়টি তাদের মধ্যে সুরাহা হয়নি। একপর্যায়ে পরিবারের বড় ছেলে দেলোয়ার হোসেন আদালতের আশ্রয় নিয়ে একটি বাটোয়ারা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং স্বত্ত্ব ৫২/১৯ ইং। মামলা দায়েরের পর আদালত বিবাদীদের বিরুদ্ধে শোকজ প্রদান করেন। শোকজ থাকা সত্ত্বেও জবাব দাখিল না করে একে একে বিবাদী দিলদার হোসেন ও মকবুল হোসেন বাবার পুরনো স্মৃতি বসতঘর ভাংচুর করে বড় ভাই ও বোনদের অংশ বুঝিয়ে না দিয়ে তাদের সুবিধা অনুযায়ী ভূমি অন্যত্র বিক্রয় করেন। বিক্রয়ের পর দলিল গ্রহীতারাও বসতঘর ভাংচুর ও ভাঙা গড়ার কাজ শুরু করলে এ বিষয়টি আদালতের নজরে আনলে আদালত উক্ত ভূমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেন।
মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন আদালতের প্রতি সন্তুষ্টি জ্ঞাপন করে বলেন, আমার পিতা যে ঐতিহ্য রেখে গেছেন আমার ভাইরা তা তছনছ করে দিচ্ছে। আমি লন্ডনে থাকা অবস্থায় আমাদের কারও অনুমতি ছাড়াই বসতঘর ভাংচুর করেছে। এখন বাড়ীর রাস্তায় দেয়াল নির্মাণ করে আমাদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমিসহ বোনরাও এই জমির অংশিদার। আমি শুধু নিজের জন্য নয়, বোনদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়ে যাচ্ছি। তাছাড়া এ জমির মালিকানার দলিলপত্রও আমাদের নামে রয়েছে। এ জমির উপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তারা জমি বিক্রি করে এবং জমিতে কাজ করে আমার বোধগম্য নয়। সাবরেজিস্টার অফিসে আমার কেয়ারটেকার অভিযোগ দেয়ার পরও দলিল রেজিস্ট্রি হয় কোন আইনে আমার জানা নেই। আমি এ ব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
লন্ডন প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের কেয়ারটেকার আব্দুল হাদী সাংবাদিকদের বলেন, আদালতে বাটোয়ারা মামলা থাকার পরও জমি বিক্রয় করা হয়েছে। বাড়ীর সামনে দিলদার হোসেন দেয়াল নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। বাড়ীতে ঢুকার কোন রাস্তা নেই। আদালতে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও উক্ত ভূমিতে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন ইকড়ছই গ্রামের জনৈক ভূমি ক্রেতারা। আমি তাদের ভয়ে বাড়ীর আশপাশেও যেতে পারছি না। বিবাদীদের হুমকিজনিত কারণে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে প্রতিপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে কেউ কথা বলতে রাজি হয়নি।