গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাজশাহীতে সারদা রেলস্টেশনে বরিশাল জেলার ঘর পালানো এক শিশুকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশ পাবনার নিকট হস্তান্তর করেন ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী আসিফুজ্জামান আসিফ।
শনিবার (১৬ এপ্রিল) সকালে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ভাল কাজের জন্য তাকে পুরস্কৃত করেন, পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খাঁন, বিপিএম। এসময় পুলিশ সুপার বলেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি ভাল কাজের জন্য পুরস্কৃত করে সকলকে উৎসাহিত করতে চাই।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৩ এপ্রিল) সময় ঠিক বিকেল ৫.৪৫ মিনিট। সারদাহ রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরছিলো ইব্রাহিম (১০) নামে এক শিশু। অভিভাবক হীন অবস্থায় শিশুটির দিকবিদিক ঘোরাফেরা নজরে এসেছিলো আসিফুজ্জামান আসিফ নামে এক ছাত্রলীগ নেতার। কিছুক্ষন ছেলেটির এমন ঘেরাফেরা লক্ষ করে তার কাছে এগিয়ে যায় আসিফ। ছেলেটির সাথে কথা বলে জানতে পারেন, ইব্রাহিম বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বিল্লগ্রাম (গোমস্তা বাড়ি) কামাল হোসেনের ছেলে। বাড়ি থেকে মায়ের সাথে রাগ করে চলে এসেছে সে। এখানে তার কোন থাকার জায়গা নেই।
এরপর ছাত্রলীগ নেতা আসিফ পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মহিবুল ইসলাম খান কে জেলা পুলিশ পাবনা ফেসবুক আইডির মেসেনজারে বিষয়টি অবহিত করলে পুলিশ সুপার শিশুটিকে ঈশ্বরদী থানায় পৌঁছে দিতে বলেন। এরপর পুলিশ সুপারের অনুরোধে আসিফ শিশুটিকে থানায় পৌঁছে দেন।
পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঈশ্বরদী থানার ডিউটি অফিসার ছেলেটিকে নিজ হেফাজতে নেয় এবং শিশুটিকে ঈশ্বরদী থানার নারী শিশু বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হেল্প ডেক্স এ রাখেন। ততক্ষনে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান ছেলেটির পরিচয় উদঘাটন করেন এবং তার বাড়িতে খবর দিতে আগৈলঝাড়া থানায় যোগাযোগ করেন।
এরপরই বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) শিশুটির পিতা ঈশ্বরদী থানায় আসেন। পিতা-পুত্র একে অপরকে দেখে খুব খুশি। পরে ছেলেটিকে নিজ বাড়ীতে নিয়ে যান।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা আসিফ ছেলেটিকে দেখে পুলিশ কে না জানালে শিশুটি কোন পাচারকারীর হাতে পরত অথবা অভিভাবকহীনভাবে বড় হত, বখাটে হয়ে যেত বা মাদকসেবনে জড়িয়ে পরতে পারতো বলে ধারনা করে পাবনা জেলা পুলিশ ফেসবুক আইডিতে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খাঁন। তিনি বলেন, আসিফের মত তরুনেরাই এই বাংলাদেশের ভবিষ্যত। ঐদিনই পাবনা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে অনেক ধন্যবাদ, ও পুলিশ সুপার মহোদয়েরর পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করবেন বলেও জানানো হয়।
আসিফুজ্জামান আসিফ ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। আসিফ জানান, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়েই সবসময় ভালো কাজগুলো করার চেষ্টা করি। প্রশংসা পাবো বলে কিছু করি নি। তখন একটা বিষয়ই মাথায় ছিলো ছেলেটিকে কিভাবে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। তখন পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মহিবুল স্যারকেই একমাত্র নির্ভরযোগ্য মানবিক মানুষ হিসেবে মনে হয়েছিলো। পুলিশের পক্ষ থেকে উৎসাহ পেয়ে ভালো লাগছে। এখানে আমার চেয়ে জেলা পুলিশের ভূমিকায় বেশি, এজন্য আমি পুলিশ সুপার ও ওসি স্যার সহ পাবনা জেলা পুলিশ কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানায়। তাদের মতো অফিসার পেয়ে আমরা সত্যিই গর্বিত।