কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দুলালপুর ইউপির বড়ুরিয়া বাঁধের খালপাড়া এলাকা সংলগ্ন গড়াই নদীর পাড়ে হঠাৎ ভাঙন লেগেছে।
কয়েকদিনের ব্যবধানে প্রায় আধা কিলোমিটার পাড় ভেঙে পড়েছে। এতে বিলীন হয়ে গেছে গাছপালা, ফসলি জমি ও নদী পাড়ের সরু রাস্তা।
এছাড়াও ভয়াবহ নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে নদী পাড়ের বাড়িঘর ও কয়েকশত একর ফসলি, আম বাগান, লিচু বাগানের জমি। আতঙ্কে দিনাপতি করছে বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালপাড়া এলাকায় গড়াই নদীতে প্রায় আধা কিলোমিটার অংশে ভাঙন লেগে। গাছপালা ও কিছু আম জাম গাছের বাগান নদীগর্ভে চলে গেছে। হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের মানুষের চির চেনা বসত ও আবাদি জমি।
নদীগর্ভে বিলীন হওয়া পরিবারগুলোর চোখ দিয়ে এখন শুধু হতাশার অশ্রু। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন শুধুই নির্বাক হয়ে চেয়ে আছে নদীর দিকে। আবাদি ফসল ও জমি চোখের সামনে চলে যাচ্ছে নদীতে।
ভাঙন এলাকার বাসিন্দা কালোন শেখ বলেন, নদী ভাঙনে ভীষণ বিপদে আছি। দ্রুত ব্লক দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হোক। না হলে সব শেষ হয়ে যাবে। আশাদুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙন কবলে পড়েছে এখানকার ফসলি জমি ও বসতবাড়ি, যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, এখানে অধিকাংশ জমিতে আম ও লিচু বাগান ছিল। পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রভাবশালীরা বালু তুলে। ফলে প্রতি বছরই ভাঙন লাগে। তবে এবছর অতিরিক্ত পানি বেড়েছিল নদীতে। পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষক কবিরুল ইসলাম বলেন, নদীপাড়ে আমার দেড় বিঘা জমি ছিল। সেখানে লিচু বাগানের সঙ্গে হলুদের চাষ করতাম। কিন্তু এবার নদীর পেটে সব চলে গেল।
বড়ুরিয়া গ্রামের একটি আম বাগানের মালিক মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে মতিয়ার রহমান। তিনি বলেন, এবার ভাঙনের প্রবণতা বেশি। ভাঙনরোধ করা না গেলে জমির সঙ্গে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে যাবে।
নন্দনালপুর ইউপি চেয়ারম্যান নওশের আলী বলেন, খবর পেয়ে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সালাহ্উদ্দিন বলেন, গড়াই নদী ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্ভাব্য সকল ভাঙন স্থানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউএনও বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, ভাঙনের বিষয়টি মাত্রই জানতে পেরেছি। ভাঙন প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।