আর মাত্র ১ দিন পরেই পাবনা জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।সম্মেলন কে ঘিরে অলিতে গলিতে চায়ের দোকানে জমে উঠেছে গল্পের মেলা, কে হচ্ছে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি।এদিকে ঈশ্বরদী সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাসের নাম আলোনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি ঈশ্বরদী আটঘরিয়ার গণমানুষের আস্থার আশ্রয়স্থল। ঈশ্বরদীর দিধাবিভক্তির টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তিনি তার অসামান্য রাজনৈতিক মেধা, মনন, উদার ও প্রজ্ঞা দিয়ে সুদক্ষতার সাথে সামাল দিয়ে চলেছেন।ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি অন্যান্য,সৎ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অধিকারী।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীর ডিলু সাহেবের মৃত্যুর পর গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মানবতার মা, দেশনেত্রী শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের দ্বায়িত্বভার তুলে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাসের হাতে। সাড়ে ষোল কোটি মানুষের আস্থার শেষ আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনা তার অতুলনীয় প্রজ্ঞারই পরিচয় দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস কে এ অঞ্চলের দ্বায়িত্বভার দিয়ে।২০১৬ সালে ঈশ্বরদীতে অভ্যান্তরীন কোন্দল নিয়ে ঈশ্বরদীর আওয়ামীলীগের রাজনীতির বিভক্ত হয়ে পড়ে।এ-র পড়ে কালক্রমে ঈশ্বরদীর রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অস্থীরতা দেখা দেয়।ক্রমে ক্রমে ঈশ্বরদীর রাজনীতি ঘোলা হয়ে উঠে।২০২০ সালে বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি মৃত্যুবরন করলে জননেত্রী শেখ হাসিনার ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া উপনির্বাচনে এ অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস কে নৌকা মনোনীত করেন।উপনির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী হাবিবুর রহমান হাবিব কে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ভোটে পরাজিত করেন।
পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল আতংকের। এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সংকায় ছিলেন যে কার হাতে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী? দলীয় ক্রন্দল ও ঐক্য না থাকায় অনেকে এমন সংকায় ছিলেন যে এখানে রক্তপাত সৃষ্টি হতে পারে।কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস কে জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত করার পর সাথেই সাথেই এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে সংকার পরিবর্তে স্বস্তি নেমে আসে। গণমানুষের ঢল নামে তার বাড়িতে। সকল মতভেদ ভুলে সবাই তাকে স্বাগত জানায়। জনসাধারণ তাকে বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন।সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার আওয়ামীলীগ কে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।তার নেতৃত্বে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া আওয়ামীলীগ সুসংগঠিত হতে শুরু করে। এরপর তিনি সফলতার সাথে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন। পরবর্তীতে ঈশ্বরদী পৌর নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করেন।
এরপর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়। আবার নেতাকর্মীদের মনে রক্তপাতের আশংকা তৈরি হয়। এবারও তিনি তার প্রজ্ঞা ও দক্ষতার পরিচয় দেন। এ অঞ্চলের নেতাকর্মীর ভাষ্যমতে এমন সুষ্ঠু সুন্দর সম্মেলন তারা তাদের রাজনৈতিক জীবনে কখনও দেখেননি বলে অনেকে মন্তব্য করেন।নেতাকর্মীদের এমন সুষ্ঠু সুন্দর সম্মেলন উপহার দেওয়ার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এরপর তিনি ঈশ্বরদী উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি আসনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীর বিজয়ী করতে সফলতা অর্জন করেন। তার আটঘরিয়া পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীদের বিজিত করতে সফলতা লাভ করে। তিনি ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে সবসময়ই সফলতার পরিচয় দিয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খোরশেদ আলী বিশ্বাস এবং মাতার নাম তহুরুন নেছা। ছেলেবেলায় তিনি দুরন্ত প্রকৃতির ছিলেন।
শিক্ষা জীবন শুরু করেন বড়ইচরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দুরন্তপনার কারনে পরবর্তীতে তাকে তার নানির বাড়ির নিকটস্থ মানিকনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। সেখানেও সে বেশিদিন টিকতে পারেননি। পরবর্তীতে ১নং বাঘইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। সেখান থেকে টিসি নিয়ে পুনরায় বড়ইচরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। বড়ইচরা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই তিনি নিম্ন মাধ্যমিকে শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করেন।
এরপর তিনি ঈশ্বরদী সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এই সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকেই তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। মাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। এবং প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন।
সেসময় তারা বাশ ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করতেন এবং শহীদ মিনারে ফুল দিতেন। পরবর্তীতে তিনি তার সহপাঠীদের সাথে নিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনারের পরিবর্তে স্থায়ী শহিদ মিনার প্রতিষ্ঠা করেন। তখন পূর্ব পাকিস্তানের কোন স্কুলে শহিদ মিনার ছিলো না।
এরই মাঝে ততকালীন সরকার হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন করে ফলে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নুরুজ্জামান বিশ্বাস সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ছাত্র আন্দোলনের ফলে সেই শিক্ষা কমিশন বাতিল করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। তখন ঈশ্বরদীতে কোন কলেজ ছিলো না, ঈশ্বরদীর মশুড়িয়া পাড়ায় কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে চাঁদা সংগ্রহ করেন।
ছাত্রাবস্থায় তিনি দুরন্তপনার পাশাপাশি রাজনীতি, খেলাধুলা, অভিনয়ও করেন। ১৯৬৪ সালের নির্বাচন উপলক্ষে স্বৈরাচার পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খান ঈশ্বরদী সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে জনসভার আয়োজন করে। সেই সময় নুরুজ্জামান বিশ্বাস ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সেই জনসভা পন্ড করে দেন। সেই থেকে বঙ্গবন্ধু নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন