সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ

চৌফলন্ডীর এসটি মামলার পলাতক আসামীকে ধরিয়ে দিলেই পুরষ্কার

কক্সবাজার প্রতিনিধি / ২৬৩ বার পঠিত
আপডেট : মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৪:৪০ অপরাহ্ণ

যুগ্ম দায়রা জজ ১ম আদালত কক্সবাজার। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সদর, এর সি আর যার মামলা নং-৮৫২/১৫। অভিযোগকারী সেলিনা আকতার,আসামী শাহা ইউনুছ, প্রসিকিউশনপক্ষে জনাব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বিজ্ঞ এ পি পি, আসামীপক্ষে আসামী পলাতক থাতায় কোন কৌশুলী নিযুক্ত নাই।অভিযোগ-দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক্ট,১৮৮১ এর ১৩৮ ধারা।রায় প্রকাশের তারিখঃ ১২.০২.১৮ ইং।প্রসিকিশন পক্ষের মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ হল আসামী শাহা ইউনুছ অভিযোগকারী এর পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য বিগত ০৮.০৭.১৫ ইং তারিখে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ, ঈদগাঁও শাখা এর আসামীর নামীয় হিসাব এর অনুকূলে ৭,০০,০০০/-(সাত লক্ষ) টাকা বাবদ চেক নং-৩০৩৬৪০৭ অভিযোগকারীকে প্রদান করেন। অভিযোগকারী উক্ত চেকটি নগদায়নের জন্য বিগত ২৩.০৭.১৫ ইং তারিখে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে উপস্থাপন করলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একাউন্টে ‘অপর্যাপ্ত তহবিল ’ উল্লেখ করে চেকটি প্রত্যাখ্যান করতঃ ডিজঅনার স্লিপ সহ অভিযোগকারীকে ফেরত দেয়।পরে বিগত ২৭.০৮.১৫ ইং তারিখে অভিযোগকারী তার আইনজীবীর মাধ্যমে আসামী বরাবরে এ/ডি সহ রেজিস্টর্ড ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। এরপরেও আসামী চেকে বর্ণিত টাকা বা কোন টাকা পরিশোধ করেন নাই,তাই অভিযোগকারী অত্র মামলা দায়ের করেন। মামলার অভিযোগকারী বিগত ২০.০৯.১৫ ইং তারিখে অভিযোগ দায়ের করলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযোগকারীকে দি ক্রিমিনাল প্রসিডিউর কোড,১৮৯৮ এর ২০০ ধারায় পরীক্ষা করে মামলায় দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক্ট, ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেন।এইভাবে মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত,কক্সবাজার মাননীয় দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করেন এবং এস.টি ৪৬২/১৬ ইং মামলা হিসেবে বালামভুক্ত করেন এবং চার্জ গঠন পর্যায়ে অত্রাদালতে প্রেরণ করা হলে বিগত ৮৫২/১৫ ইং তারিখে আসামীর বিরুদ্ধে দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক্ট ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধের অভিযোগ চার্জ গঠন করা হয়। অভিযুক্ত আসামী পলাতক থাকায় গঠিত চার্জ তাকে পাঠ করেনশোনানো সম্ভব হয় নাই। সাক্ষ্য গ্রহণ পর্যায়ে প্রেসিকিউশন পক্ষে মামলার অভিযোগকারী নুরুল আমিন পি,ডব্লিউ-১ হিসেবে জবানবন্দী প্রদান করেন। প্রসিকিউশন পক্ষে উপস্থাপিত নালিশ (প্রদর্শনী-১), নালিশী দরখাস্তে প্রদত্ত স্বাক্ষর (প্রদর্শনী -১(১)), চেক (প্রদর্শনী -২),ডিসঅনার স্লিপ (প্রদর্শনী -৩),ডাক রশিদ (প্রদর্শনী -৪) হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রসিকিউশন পক্ষে সাক্ষ্য গ্রহন শেষে অভিযুক্ত আসামীকে দি কোড অব ত্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ এর ৩৪২ ধারা মতে পরীক্ষা করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু পলাতক থাকায় সম্ভব হয় নাই। বিবেচ্য বিষয়ঃ- অত্র মামলায় আসামী শাহা ইউনুছকে দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক্ট,১৮৮১ এর ১৩৮ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করতঃ সাজা দেওয়া যায় কি? আলোচনা ও সিদ্ধান্তঃ- পি, ডব্লিউ -১ সেলিনা আকতার তাঁর জবানবন্দীতে বলেন, আমি বাদী। আসামী শাহা ইউনুছ। তিনি আমার কাছ থেকে ৭,০০,০০০/-টাকা ধার নিয়ে ঐ টাকা ধার নিয়ে বাবত ০৮.০৭.১৫ ইং তারিখে ৩০৩৬৪০৭ নং চেক দেন। তা ২৩.০৭.১৫ ইং তারিখ ডিসঅনার হলে ১৭.০৮.১৫ ইং তারিখ নোটিশ দেই। টাকা না দেওয়ায় ২০.০৯.১৫ ইং তারিখ মামলা করি, এই সেই নালিশ যা প্রদর্শনী -১, এতে স্বাক্ষর আমার যা প্রদর্শনী -১(১)।এই সেই চেক, যা প্রদর্শনী -২, এই সেই ডিসঅনার স্লিপ যা প্রদর্শনী -৩।এই সেই ডাক রশিদ, যা প্রদর্শনী -৪।অভিযোগকারীর জবানবন্দী সহ দালিলীক সাক্ষ্য- প্রমাণাদি যথা,(প্রদর্শনী -১,নালিশী দরখাস্ত প্রদত্ত স্বাক্ষর (প্রদর্শনী -১(১),চেক প্রদর্শনী -২)ডিসঅনার স্লিপ +প্রদর্শনী -৩) ও ডাক রশিদ (প্রদর্শনী -৪) পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে অভিযোগকারী তার আনীত অভিযোগ সুস্পষ্টরূপে উপস্থাপন করতে সমর্থ হয়েছেন। আসামী পলাতক থাকায় পি.ডব্লিউ -১ কে কোনরূপ জেরা হয় নি।ফলে অভিযোগকারী বক্তব্য অখন্ডিত (Unrebutted) থেকে যায়।রাষ্ট্রপক্ষের বিজ্ঞ এ.পি.পি বলেন “আসামী’র বরাবরে ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হলেও আসামী নোটিশের কোন জবাব প্রদান করেন নাই বা যোগাযোগ করেন নাই।রাষ্ট্রপক্ষের বিজ্ঞ কৌশুলী নোটিশের ব্যাপারে যে বক্তব্য প্রদান করেছেন সে সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক আইন সম্পর্কে আলোকপাত করা যায়।

এ প্রসঙ্গে জেনারেল ক্লজেস আ্যক্টের ২৭ ধারার বিধান নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ-উপরিউক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় অভিযোগকারী কর্তৃক প্রেরিত লিগ্যাল নোটিশ আসামীর উপর যথাযথ ভাবে জারী হয়েছে।নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে বর্তমান মামলাটি ২০.০৯.১৫ ইং তারিখে দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত আসামী লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার পর টাকা পরিশোধের জন্য দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টুস এক্ট ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় বর্ণিত ৩০ দিনের সময় প্রদান করা হয়। পি.ডব্লিউ -১ এর জবানবন্দি ও মামলায় উপস্থাপিত দালিলীক সাক্ষ্য থেকে দৃষ্ট হয় যে, আসামী বরাবরে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হলে তিনি তা গ্রহণ না করায় ফেরত আসে। এ সকল বিষয় পর্যালোচনায় অভিযুক্ত আসামী দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক্ট,১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন মর্মে নালিশকারী সন্দেহাতীত ভাবে প্রমান করতে সমর্থ হয়েছেন। নালিশকারী তার জবানবন্দী প্রদর্শনী -১-৪ পর্যন্ত দাখিলীয় কাগজাত দ্বারা এটা প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছেন যে, আসামী তাকে যে চেক দিয়েছিলেন তা তিনি আইন এর যথাযত সময় ও মেয়াদের মধ্যে ব্যাংকে উপস্থাপন করেন,তা ডিসঅনার হলে যথা সময়ের মধ্যেই তাকে নোটিশ দেয়া হয়, আসামী টাকা পরিশোধ না করায় আইন এর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তিনি বর্তমান মামলা দায়ের করেছেন, আসামী টাকা ঋন নিয়ে পরিশোধ না করে না করে বাদীকে হয়রানী করেছে,একই সাথে আদালতের মূল্যবান সময়ের অপচয় ও রাষ্ট্রিয় অর্থের অপচয় করেছে।এ সকল বিষয় মৌখিক ও দালিলীক সাক্ষ্য সহ চেকের টাকা বিবেচনায় আসামী শাহা ইউনুছকে ৭ মাসের কারাদন্ড ও ৭,২০,০০০/- (সাত লক্ষ বিশ হাজার) টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হল,এইভাবে বিবেচ্য বিষয় প্রসিকিউশন পক্ষের অনুকূলে নিষ্পত্তি করা হল। অতএব আদেশ হয় যে,অত্র মামলায় অভিযুক্ত পলাতক আসামী শাহা ইউনুছ, পিতা-মৃত অছিউর রহমানকে দি নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস এক্ট,১৮৮১ এর ১৩৮ ধারায় দোষী সাব্যস্থ ক্রমে ৭(সাত) মাসের কারাদন্ড সহ ৭,২০,০০০/-(সাত লক্ষ বিশ হাজার) টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হল,জরিমানা আদায় হলে চেকের সমপরিমাণ অর্থাৎ ৭,০০,০০০/- টাকা চেক গ্রহীতা হিসেবে অভিযোগ কারী প্রাপ্ত হবেন। বাকি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে।বাদী তার টাকা আদায় সংক্রান্তে ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৮৬ ধারা মতে আইনী ব্যাবস্থা নিতে পারবেন। সাজা পরোয়ানা সহ গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ইস্যু করা হোকন।আসামী স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করলে কিংবা পুলিশ কর্তৃক ধৃত হলে আত্মসমর্পণ বা ধৃত হওয়ার দিন হতে সাজার মেয়াদ গণনা শুরু হবে, রায়ের অনুলিপি বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও জেলা প্রশাসক কক্সবাজার বরাবরে প্রেরণ করা হোক।

উল্লেখ্য বাদী সেলিনা আকতার জানান আসামী শাহা ইউনুছ কে ধরিয়ে দিতে পারলে নগদ টাকা পুরুষ্কার দেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!
Bengali Bengali English English Russian Russian
error: Content is protected !!